সূরা আলাকের বাংলা অর্থ ও উচ্চারণ:-
সূরা আলাক পবিত্র কোরআনের ৯৬ নম্বর সূরা। সূরাটি পবিত্র কোরআনের ৩০তম পারায় অবস্থিত। এর আয়াত সংখ্যা ১৯। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ।
নির্ভরযোগ্য বর্ণনা থেকে প্রমাণিত, সূরা আলাক থেকেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ওহীর সূচনা হয় এবং এ সূরার প্রথম পাঁচটি আয়াত সর্ব প্রথম নাজিল হয়। অধিকাংশ আলেম এ বিষয়ে একমত।
সূরা আলাক
اِقۡرَاۡ بِاسۡمِ رَبِّکَ الَّذِیۡ خَلَقَ ۚ ١ خَلَقَ الۡاِنۡسَانَ مِنۡ عَلَقٍ ۚ ٢ اِقۡرَاۡ وَرَبُّکَ الۡاَکۡرَمُ ۙ ٣ الَّذِیۡ عَلَّمَ بِالۡقَلَمِ ۙ ٤ عَلَّمَ الۡاِنۡسَانَ مَا لَمۡ یَعۡلَمۡ ؕ ٥ کَلَّاۤ اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَیَطۡغٰۤی ۙ ٦ اَنۡ رَّاٰہُ اسۡتَغۡنٰی ؕ ٧ اِنَّ اِلٰی رَبِّکَ الرُّجۡعٰی ؕ ٨ اَرَءَیۡتَ الَّذِیۡ یَنۡہٰی ۙ ٩ عَبۡدًا اِذَا صَلّٰی ؕ ١۰ اَرَءَیۡتَ اِنۡ کَانَ عَلَی الۡہُدٰۤی ۙ ١١ اَوۡ اَمَرَ بِالتَّقۡوٰی ؕ ١٢ اَرَءَیۡتَ اِنۡ کَذَّبَ وَتَوَلّٰی ؕ ١٣ اَلَمۡ یَعۡلَمۡ بِاَنَّ اللّٰہَ یَرٰی ؕ ١٤ کَلَّا لَئِنۡ لَّمۡ یَنۡتَہِ ۬ۙ لَنَسۡفَعًۢا بِالنَّاصِیَۃِ ۙ ١٥ نَاصِیَۃٍ کَاذِبَۃٍ خَاطِئَۃٍ ۚ ١٦ فَلۡیَدۡعُ نَادِیَہٗ ۙ ١٧ سَنَدۡعُ الزَّبَانِیَۃَ ۙ ١٨ کَلَّا ؕ لَا تُطِعۡہُ وَاسۡجُدۡ وَاقۡتَرِبۡ ٪ٛ ١٩
সূরা আলাকের বাংলা উচ্চারণ :
১. ইকরা বিছমি রাব্বিকাল্লাযী খালাক।
২. খালাকাল ইনছানা মিন আলাক।
৩. ইকরা ওয়া রাব্বুকাল আকরাম।
৪. আল্লাযী আল্লামা বিলকালাম।
৫. আল্লামাল ইনছানা-মা-লাম ইয়ালাম।
৬. কাল্লা-ইন্নাল ইনছানা লাইয়াতগা।
৭. আররাআ-হুছ তাগনা।
৮. ইন্না ইলা-রাব্বিকার রুজ‘আ।
৯. আরাআইতাল্লাযী ইয়ানহা।
১০. আবদান ইযা-সাল্লা।
১১. আরাআইতা ইন কা-না আলাল হুদা।
১২. আও আমারা বিত্তাকাওয়া।
১৩. আরাআইতা ইন কাযযাবা ওয়া তাওয়াল্লা।
১৪. আলাম ইয়ালাম বিআন্নাল্লাহা ইয়ারা।
১৫. কাল্লা-লাইল্লাম ইয়ানতাহি লানাছফাআম বিন্না-ছিয়াহ।
১৬.না-ছিয়াতিন কা-যিবাতিন খা-তিআহ।
১৭. ফাল-ইয়াদউ নাদিয়াহ।
১৮. ছানাদউঝ-ঝাবা-নিয়াহ।
১৯. কাল্লা- লা-তুতি‘হু ওয়াছজুদ ওয়াকতারিব (সিজদার আয়াত)।
সূরা আলাকের বাংলা অর্থ :
পড় তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি (সব কিছু) সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন জমাট রক্ত দ্বারা। পড় এবং তোমার প্রতিপালক সর্বাপেক্ষা বেশি মহানুভব। যিনি কলম দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন, মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন, যা সে জানত না। বস্তুত মানুষ প্রকাশ্য অবাধ্যতা করছে। বস্তুত মানুষ প্রকাশ্য অবাধ্যতা করছে। কেননা সে নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করে। এটা নিশ্চিত যে, তোমার প্রতিপালকের কাছেই সকলকে ফিরে যেতে হবে। তুমি কি দেখেছ সেই ব্যক্তিকে, যে বাধা দেয়। এক বান্দাকে যখন সে নামায পড়ে? আচ্ছা বল তো, সে (অর্থাৎ নামায আদায়কারী) যদি হেদায়েতের উপর থাকে। অথবা তাকওয়ার আদেশ করে (তখন তাকে বাধা দেওয়া কি পথভ্রষ্টতা নয়?)।
আচ্ছা বল তো, সে (বাধাদানকারী) যদি সত্য প্রত্যাখ্যান করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে সে কি জানে না আল্লাহ দেখছেন? খবরদার! সে নিবৃত্ত না হলে আমি তার মাথার অগ্রভাগের চুলগুচ্ছ ধরে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাব। সেই চুলগুচ্ছ, যা মিথ্যাচারী, গুনাহগার। সুতরাং সে ডাকুক তার জলসা-সঙ্গীদের। আমিও ডাকব জাহান্নামের ফেরেশতাদের। সাবধান! তার আনুগত্য করো না এবং সিজদা কর ও নিকটবর্তী হও। (সূরা আলাক, আয়াত : ১-১৯)
সূরা কদরের বাংলা অর্থ ও উচ্চারণ:-
সূরা কদর পবিত্র কোরআনের ৯৭তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৫টি এবং এর রুকুর সংখ্যা ১টি। এই সূরাতে পবিত্র কোরআন নাজিলের কথা এবং হাজার রাতের থেকে উত্তম শবে কদরের কথা আলোচনা করা হয়েছে।
এই সূরার শানে নুজুল সম্পর্কে হজরত ইবনে আবী হাতেম -এর রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার বনী ইসরাঈলের জনৈক মুজাহিদ সম্পর্কে আলোচনা করলেন। সে এক হাজার মাস পর্যন্ত অবিরাম জিহাদে মশগুল থাকে এবং কখনও অস্ত্র সংবরণ করেনি। মুসলমানগণ একথা শুনে বিস্মিত হলে এ সূরা কদর অবতীর্ণ হয়।
এতে এ উম্মতের জন্যে শুধু এক রাতের ইবাদতই সে মুজাহিদের এক হাজার মাসের এবাদত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ বলে গণ্য করা হয়েছে। (মাযহারী)
সূরা কদর
اِنَّاۤ اَنۡزَلۡنٰہُ فِیۡ لَیۡلَۃِ الۡقَدۡرِ ۚۖ ١ وَمَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا لَیۡلَۃُ الۡقَدۡرِ ؕ ٢ لَیۡلَۃُ الۡقَدۡرِ ۬ۙ خَیۡرٌ مِّنۡ اَلۡفِ شَہۡرٍ ؕؔ ٣ تَنَزَّلُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَالرُّوۡحُ فِیۡہَا بِاِذۡنِ رَبِّہِمۡ ۚ مِّنۡ کُلِّ اَمۡرٍ ۙۛ ٤ سَلٰمٌ ۟ۛ ہِیَ حَتّٰی مَطۡلَعِ الۡفَجۡرِ ٪ ٥
সূরা কদরের বাংলা উচ্চারণ :
১. ইন্না-আনঝালনাহু ফী লাইলাতিল কাদর।
২. ওয়ামা-আদরা-কা-মা-লাইলাতুল কাদর।
৩.লাইলাতুল কাদরি খাইরুম মিন আলফি শাহর।
৪. তানাঝঝালুল মালাইকাতু-ওয়াররুহু ফীহা-বিইযনি রাব্বিহিম মিন কুল্লি আমর।
৫. ছালা-মুন হিয়া হাত্তা-মাতলা‘ইল ফাজর।
সূরা কদরের অর্থ :
নিশ্চয়ই আমি এটা (অর্থাৎ কোরআন) শবে কদরে নাজিল করেছি। তুমি কি জান শবে কদর কী? শবে কদর এক হাজার মাস অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রূহ প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে অবতীর্ণ হয়। সে রাত (আদ্যোপান্ত) শান্তি ফজরের আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা কদর, আয়াত : ১-৫)
সূরা যিলযালের বাংলা অর্থ ও উচ্চারণ
সূরা যিলযাল পবিত্র কোরআনের ৯৯ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা আট। সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ। সূরা যিলযাল সম্পর্কে হজরত আনাস ও ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণিত।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা যিলযালকে কোরআনের অর্ধেক বলেছেন, সূরা ইখলাসকে কোরআনের এক তৃতীয়াংশ এবং সূরা কাফিরূনকে কোরআনের এক চতুর্থাংশ বলেছেন। (মাযহারী, তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন, ৮/৮৪৩)
সূরা যিলযাল
اِذَا زُلۡزِلَتِ الۡاَرۡضُ زِلۡزَالَہَا ۙ ١ وَاَخۡرَجَتِ الۡاَرۡضُ اَثۡقَالَہَا ۙ ٢ وَقَالَ الۡاِنۡسَانُ مَا لَہَا ۚ ٣ یَوۡمَئِذٍ تُحَدِّثُ اَخۡبَارَہَا ۙ ٤ بِاَنَّ رَبَّکَ اَوۡحٰی لَہَا ؕ ٥ یَوۡمَئِذٍ یَّصۡدُرُ النَّاسُ اَشۡتَاتًا ۬ۙ لِّیُرَوۡا اَعۡمَالَہُمۡ ؕ ٦ فَمَنۡ یَّعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ خَیۡرًا یَّرَہٗ ؕ ٧ وَمَنۡ یَّعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ شَرًّا یَّرَہٗ ٪
সূরা যিলযালের বাংলা উচ্চারণ :
১. ইযা-ঝুলঝিলাতিল আরদুঝিলঝা-লাহা।
২. ওয়া আখরাজাতিল আরদুআছকা-লাহা।
৩. ওয়া কা-লাল ইনছানু-মা-লাহা।
৪. ইয়াওমাইযিন তুহাদ্দিছু আখবা-রাহা।
৫. বিআন্না রাব্বাকা আওহা-লাহা।
৬. ইয়াওমা-ইযিইঁ ইয়াসদুরুন্নাছু-আশতা-তাল লিউউ-রাও আ‘মা-লাহুম।
৭. ফামাইঁ ইয়া‘মাল মিছকা-লা যাররাতিন খাইরাইঁ ইয়ারাহ।
৮. ওয়া মাইঁ ইয়া‘মাল মিছকা-লা যাররাতিন শাররাইঁ ইয়ারাহ।
সূরা যিলযালের বাংলা অর্থ :
যখন পৃথিবীকে আপন কম্পনে ঝাঁকিয়ে দেওয়া হবে। এবং ভূমি তার ভার বের করে দেবে, এবং মানুষ বলবে, তার কী হল?,সে দিন পৃথিবী তার যাবতীয় সংবাদ জানিয়ে দেবে। কেননা তোমার প্রতিপালক তাকে সেই আদেশই করবেন। সে দিন মানুষ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে প্রত্যাবর্তন করবে, কারণ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম দেখানো হবে। সুতরাং কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করে থাকলে সে তা দেখতে পাবে। এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করে থাকলে তাও দেখতে পাবে। ( সূরা যিলযাল, আয়াত : ১-৮)
সূরা আদিয়াতের বাংলা অর্থ ও উচ্চারণ:-
সূরা আদিয়াত পবিত্র কোরআনে ১০০ তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ১১। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। এটি পবিত্র কোরআনের ৩০তম পারায় অবস্থিত।
সূরা আদিয়াত
وَالۡعٰدِیٰتِ ضَبۡحًا ۙ ١ فَالۡمُوۡرِیٰتِ قَدۡحًا ۙ ٢ فَالۡمُغِیۡرٰتِ صُبۡحًا ۙ ٣ فَاَثَرۡنَ بِہٖ نَقۡعًا ۙ ٤ فَوَسَطۡنَ بِہٖ جَمۡعًا ۙ ٥ اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لِرَبِّہٖ لَکَنُوۡدٌ ۚ ٦ وَاِنَّہٗ عَلٰی ذٰلِکَ لَشَہِیۡدٌ ۚ ٧ وَاِنَّہٗ لِحُبِّ الۡخَیۡرِ لَشَدِیۡدٌ ؕ ٨ اَفَلَا یَعۡلَمُ اِذَا بُعۡثِرَ مَا فِی الۡقُبُوۡرِ ۙ ٩ وَحُصِّلَ مَا فِی الصُّدُوۡرِ ۙ ١۰ اِنَّ رَبَّہُمۡ بِہِمۡ یَوۡمَئِذٍ لَّخَبِیۡرٌ ٪
সূরা আদিয়াতের বাংলা উচ্চারণ :
১.ওয়াল আ-দিয়া-তি দাবহা।
২. ফাল মূরিয়া-তি কাদহা।
৩. ফাল মুগীরা-তি সুবহা-।
৪. ফাআছারনা বিহী নাক‘আ।
৫. ফাওয়া-ছাতানা বিহী জামআ।
৬. ইন্নাল ইনছা-না লিরাব্বিহী লাকানূদ।
৭. ওয়া ইন্নাহূ-আলা-যা-লিকা লাশাহীদ।
৮.ওয়া ইন্নাহূ-লিহুব্বিল খাইরি লাশাদীদ।
৯.আফালা-ইয়া‘লামু-ইযা-বু‘ছিরা মা-ফিল কুবূর।
১০. ওয়া হুসসিলা মা-ফিসসুদূর।
১১. ইন্না রাব্বাহুম বিহিম ইয়াওমা-ইযিল্লাখাবীর।
সূরা আদিয়াতের বাংলা অর্থ :
শপথ সেই ঘোড়াসমূহের, যারা ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ায়। তারপর যারা (খুরের আঘাতে) অগ্নিস্ফুলিঙ্গ উৎক্ষিপ্ত করে। তারপর প্রভাতকালে আক্রমণ চালায়। এবং তখন ধুলো উড়ায়। তারপর সেই সময়ই (শত্রু সৈন্যের) কোন ভীড়ের মাঝখানে ঢুকে পড়ে। মানুষ তার প্রতিপালকের বড়ই অকৃতজ্ঞ। এবং সে নিজেই এ বিষয়ে সাক্ষী। এবং বস্তুত সে ধন-সম্পদের ঘোর আসক্ত। তবে কি সে সেই সময় সম্পর্কে জ্ঞাত নয়, যখন কবরে যা-কিছু আছে তা বাইরে উৎক্ষিপ্ত হবে। এবং বুকের ভেতর যা-কিছু আছে, তা প্রকাশ করে দেওয়া হবে? নিশ্চয়ই তাদের প্রতিপালক সে দিন তাদের (যে অবস্থা হবে, সে) সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবহিত। (১-১১)
সূরা কারিয়া বাংলা অর্থ ও উচ্চারণ:-
সূরা আল কারিয়া পবিত্র কোরআনের ১০১ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ১১। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। এটি পিবত্র কোরআনের ৩০ তম পারায় অবস্থিত।
সূরা কারিয়ায় আল্লাহ তায়ালা কিয়ামত দিবসের বিভীষিকার আলোচনা তুলে ধরেছেন। এবং নেক আমল ও বদ আমলের ভিত্তিতে পরকালে মানুষের অবস্থানের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই সূরাতে।
সূরা কারিয়া
اَلۡقَارِعَۃُ ۙ ١ مَا الۡقَارِعَۃُ ۚ ٢ وَمَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا الۡقَارِعَۃُ ؕ ٣ یَوۡمَ یَکُوۡنُ النَّاسُ کَالۡفَرَاشِ الۡمَبۡثُوۡثِ ۙ ٤ وَتَکُوۡنُ الۡجِبَالُ کَالۡعِہۡنِ الۡمَنۡفُوۡشِ ؕ ٥ فَاَمَّا مَنۡ ثَقُلَتۡ مَوَازِیۡنُہٗ ۙ ٦ فَہُوَ فِیۡ عِیۡشَۃٍ رَّاضِیَۃٍ ؕ ٧ وَاَمَّا مَنۡ خَفَّتۡ مَوَازِیۡنُہٗ ۙ ٨ فَاُمُّہٗ ہَاوِیَۃٌ ؕ ٩ وَمَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا ہِیَہۡ ؕ ١۰ نَارٌ حَامِیَۃٌ ٪ ١١
সূরা কারিয়া বাংলা উচ্চারণ :
আল-ক্বারিয়াহ। মাল-ক্বারিয়াহ। ওয়ামা-আদরাক্বামাল-ক্বারিয়াহ। ইয়াওমা ইয়াকুনু-ন্নাছুকাল-ফারাশিল-মাবছুত। ওয়াতাকুনুল-জিবালু-কাল-ইহনিল-মাংফুশ। ফা-আম্মা-মাং-ছাকুলাত মাওয়াঝিনুহ, ফাহুয়া-ফি-ইশাতিররাদ্বিয়াহ। ওয়াম্মা মাং-খাফফাত মাওয়া ঝি-নুহ। ফাউম্মুহু হা-উয়াহ। ওয়ামা আদ্বরাকামাহিয়া। নারুন-হামিয়াহ।
সূরা কারিয়া বাংলা অর্থ :
(স্মরণ কর) সেই ঘটনা, যা (অন্তরাত্মা) কাঁপিয়ে দেবে। (অন্তরাত্মা) প্রকম্পিতকারী সে ঘটনা কী? তুমি কি জান (অন্তরাত্মা) প্রকম্পিতকারী সে ঘটনা কী? যে দিন সমস্ত মানুষ বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মত হয়ে যাবে। এবং পাহাড়সমূহ হবে ধূনিত রঙ্গিন পশমের মত। তখন যার পাল্লা ভারী হবে। সে তো সন্তোষজনক জীবনে থাকবে। আর যার পাল্লা হালকা হবে। তার ঠিকানা হবে এক গভীর গর্ত। তুমি কি জান তা কী? এক উত্তপ্ত আগুন। (সূরা কারিয়াহ, আয়াত : ০১-১১)
সূরা তাকাসুরের বাংলা অর্থ ও উচ্চারণ:-
সূরা তাকাসূর, পবিত্র কোরআনের ১০২ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা আট। এটি মক্কায় অবর্তীণ সূরা এবং সূরাটি পবিত্র কোরআনের ৩০তম পারায় অবস্থিত।
প্রাচুর্য লাভ করার জন্য মানুষের পরস্পরের অগ্রবর্তী হওয়ার চেষ্টা করা ও প্রতিযোগিতা করা। অন্যের তুলনায় বেশি প্রাচুর্য লাভ করার কথা নিয়ে পরস্পরের মোকাবেলায় বড়াই করে বেড়ানো এবং এর পরিণতি বিষয়ে সূরাটি নাজিল হয়েছে।
সূরা তাকাসূর
اَلۡہٰکُمُ التَّکَاثُرُ ۙ ١ حَتّٰی زُرۡتُمُ الۡمَقَابِرَ ؕ ٢ کَلَّا سَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ۙ ٣ ثُمَّ کَلَّا سَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ؕ ٤ کَلَّا لَوۡ تَعۡلَمُوۡنَ عِلۡمَ الۡیَقِیۡنِ ؕ ٥ لَتَرَوُنَّ الۡجَحِیۡمَ ۙ ٦ ثُمَّ لَتَرَوُنَّہَا عَیۡنَ الۡیَقِیۡنِ ۙ ٧ ثُمَّ لَتُسۡـَٔلُنَّ یَوۡمَئِذٍ عَنِ النَّعِیۡمِ ٪ ٨
সূরা তাকাসূর বাংলা উচ্চারণ :
আল-হাকুমু-ত্বাকাছুর। হাত্বা-ঝুরতুমুল-মাক্বাবির। কাল্লা ছাউফা-তা’লামুন। ছুম্মা-কাল্লা ছাউফা-তা’লামুন। কাল্লা-লাউতা’-লামুনা-ইলমাল-ইয়াক্বিন। লা-তারা-উন্নাল-জাহিম। ছুম্মা লাতারা-উন্নাহা-আইনাল-ইয়াক্বিন। ছুম্মা লাতুছ-আলুন্না- ইয়াওমা-ইযিন-আনি-নাঈম।
সূরা তাকাসূর বাংলা অর্থ :
(পার্থিব ভোগ সামগ্রীতে) একে অন্যের উপর আধিক্য লাভের প্রচেষ্টা তোমাদেরকে উদাসীন করে রাখে। যতক্ষণ না তোমরা কবরস্থানে পৌঁছ। কিছুতেই এরূপ সমীচীন নয়। শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে। আবারও (শোন), কিছুতেই এরূপ সমীচীন নয়। শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে। কক্ষণও নয়। তোমরা নিশ্চিত জ্ঞানের সাথে যদি এ কথা জানতে (তবে এরূপ করতে না)। তোমরা জাহান্নাম অবশ্যই দেখবে। তোমরা অবশ্যই তা দেখবে চাক্ষুষ প্রত্যয়ে। অতঃপর সে দিন তোমাদেরকে নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে (যে, তোমরা তার কী হক আদায় করেছ?) (সূরা তাকাসূর, আয়াত : ১-৮)
সূরা আসরের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ :-
সূরা আল আসর পবিত্র কোরআনের ১০৩ নম্বর সূরা। এই সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ৩ টি। আসর একটি আরবি শব্দ। আসর-এর বাংলা অর্থ-যুগ।
সূরা আসর
وَالۡعَصۡرِ ۙ ١ اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَفِیۡ خُسۡرٍ ۙ ٢ اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَتَوَاصَوۡا بِالۡحَقِّ ۬ۙ وَتَوَاصَوۡا بِالصَّبۡرِ ٪ ٣
সূরা আল-আসর বাংলা উচ্চারণ :
১. ওয়াল ‘আসর।
২. ইন্নাল ইনছা-না লাফী খুছর।
৩. ইল্লাল্লাযীনা আ-মানূ -ওয়া -আমিলুসসা-লিহা-তি ওয়া তাওয়া-সাওবিল হাক্কি ওয়া তাওয়া-সাও বিসসাবরি।
সূরা আল-আসর বাংলা অনুবাদ
১. কসম যুগের (সময়ের),
২. নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;
৩. কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের। (সূরা আসর, আয়াত : ১-৩)
সূরা হুমাযার বাংলা অর্থ ও উচ্চারণ:-
সূরা হুমাযা পবিত্র কোরআনে ১০৪ নম্বর সূরা। এর অর্থ : পরনিন্দাকারী। এর আয়াত সংখ্যা ৯টি। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ ও পবিত্র কোরআনের ৩০তম পারায় অবস্থিত।
সূরা হুমাযা
وَیۡلٌ لِّکُلِّ ہُمَزَۃٍ لُّمَزَۃِۣ ۙ ١ الَّذِیۡ جَمَعَ مَالًا وَّعَدَّدَہٗ ۙ ٢ یَحۡسَبُ اَنَّ مَالَہٗۤ اَخۡلَدَہٗ ۚ ٣ کَلَّا لَیُنۡۢبَذَنَّ فِی الۡحُطَمَۃِ ۫ۖ ٤ وَمَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا الۡحُطَمَۃُ ؕ ٥ نَارُ اللّٰہِ الۡمُوۡقَدَۃُ ۙ ٦ الَّتِیۡ تَطَّلِعُ عَلَی الۡاَفۡـِٕدَۃِ ؕ ٧ اِنَّہَا عَلَیۡہِمۡ مُّؤۡصَدَۃٌ ۙ ٨ فِیۡ عَمَدٍ مُّمَدَّدَۃٍ ٪ ٩
সূরা হুমাযা বাংলা উচ্চারণ :
ওয়াই-লুলিলকুল্লি হুমাঝাতিল লুমাঝাহ । আল্লাযী জামা‘আ মা-লাওঁ‘ওয়া ‘আদ্দাদাহ। ইয়াহ-ছাবুআন্না মা-লাহূআখলাদাহ। কাল্লা-লাইউমবাযান্না ফিল হুতামাহ। ওয়ামাআদরা-কা মাল হুতামাহ। না-রুল্লা-হিল মূকাদাহ। আল্লাতী তাত্তালি‘উ আলাল আফইদাহ। ইন্নাহা-‘আলাইহিম মু’সাদাহ। ফী ‘আমাদিম মুমাদ্দাদাহ।
সূরা হুমাযা অর্থ :
বহু দুঃখ আছে প্রত্যেক এমন ব্যক্তির, যে পেছনে অন্যের বদনাম করে (এবং) মুখের উপরও নিন্দা করে। যে অর্থ সঞ্চয় করে ও তা বারবার গুণে দেখে। সে মনে করে তার সম্পদ তাকে চিরজীবি করে রাখবে। কক্ষণও নয়। তাকে তো এমন স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, যা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেলে। তুমি কি জান সেই চূর্ণ-বিচূর্ণকারী জিনিস কী? তা আল্লাহর প্রজ্বলিত আগুন। যা হৃদয় পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। নিশ্চয়ই তা তাদের উপর আবদ্ধ করে রাখা হবে। যখন তারা (আগুনের) লম্বা-চওড়া স্তম্ভসমূহের মধ্যে (পরিবেষ্টিত) থাকবে। (সূরা হুমাযা, আয়াত : ১-৯)
এই সূরায় তিনটি জঘন্য গুনাহের শাস্তি ও তার তীব্রতা বর্ণিত হয়েছে। গুনাহ তিনটি হচ্ছে- جَمَعَ مَالًا هُمَزَة لُمَزَة (‘হুমাযাহ, লুমাযাহ ও জামাআ মালা’)। অর্থাৎ, কাউকে দোষারোপ করা, পেছনে নিন্দা করা ও সম্পদ জমা করা।
এই তিন জঘন্য গুনাহের শাস্তি সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,এই অপরাধে জড়িতদের ‘হুত্বামাহ’ নামের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। এই জাহান্নামের আগুন এমন হবে যে, তা মানুষের হৃদয়কে পর্যন্ত গ্ৰাস করবে। হৃদয় পর্যন্ত এই আগুন পৌঁছে যাবার অর্থ হচ্ছে এই যে, এই আগুন এমন জায়গায় পৌছে যাবে যেখানে মানুষের অসৎচিন্তা, ভুল আকীদা-বিশ্বাস, অপবিত্র ইচ্ছা, বাসনা, প্রবৃত্তি, আবেগ এবং দুষ্ট সংকল্প ও নিয়তের কেন্দ্র। (ফাতহুল কাদীর)