সূরা ফাজরের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা ফাজর পবিত্র কোরআনের ৮৯ নম্বর সূরা। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ ও কোরআনের ত্রিশতম পারায় অবস্থিত। এর আয়াত সংখ্যা ৩০। এই সূরার শুরুতে আল্লাহ তায়ালা পাঁচটি জিনিসের শপথ গ্রহণ করেছেন। এরপর আল্লাহর সঙ্গে আদ, সামুদ জাতি ও ফেরাউনের অবাধ্যতা ও তার পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
সূরা ফাজর
وَالۡفَجۡرِ ۙ ١ وَلَیَالٍ عَشۡرٍ ۙ ٢ وَّالشَّفۡعِ وَالۡوَتۡرِ ۙ ٣ وَالَّیۡلِ اِذَا یَسۡرِ ۚ ٤ ہَلۡ فِیۡ ذٰلِکَ قَسَمٌ لِّذِیۡ حِجۡرٍ ؕ ٥ اَلَمۡ تَرَ کَیۡفَ فَعَلَ رَبُّکَ بِعَادٍ ۪ۙ ٦ اِرَمَ ذَاتِ الۡعِمَادِ ۪ۙ ٧ الَّتِیۡ لَمۡ یُخۡلَقۡ مِثۡلُہَا فِی الۡبِلَادِ ۪ۙ ٨ وَثَمُوۡدَ الَّذِیۡنَ جَابُوا الصَّخۡرَ بِالۡوَادِ ۪ۙ ٩ وَفِرۡعَوۡنَ ذِی الۡاَوۡتَادِ ۪ۙ ١۰ الَّذِیۡنَ طَغَوۡا فِی الۡبِلَادِ ۪ۙ ١١ فَاَکۡثَرُوۡا فِیۡہَا الۡفَسَادَ ۪ۙ ١٢ فَصَبَّ عَلَیۡہِمۡ رَبُّکَ سَوۡطَ عَذَابٍ ۚۙ ١٣ اِنَّ رَبَّکَ لَبِالۡمِرۡصَادِ ؕ ١٤ فَاَمَّا الۡاِنۡسَانُ اِذَا مَا ابۡتَلٰىہُ رَبُّہٗ فَاَکۡرَمَہٗ وَنَعَّمَہٗ ۬ۙ فَیَقُوۡلُ رَبِّیۡۤ اَکۡرَمَنِ ؕ ١٥ وَاَمَّاۤ اِذَا مَا ابۡتَلٰىہُ فَقَدَرَ عَلَیۡہِ رِزۡقَہٗ ۬ۙ فَیَقُوۡلُ رَبِّیۡۤ اَہَانَنِ ۚ ١٦ کَلَّا بَلۡ لَّا تُکۡرِمُوۡنَ الۡیَتِیۡمَ ۙ ١٧ وَلَا تَحٰٓضُّوۡنَ عَلٰی طَعَامِ الۡمِسۡکِیۡنِ ۙ ١٨ وَتَاۡکُلُوۡنَ التُّرَاثَ اَکۡلًا لَّمًّا ۙ ١٩ وَّتُحِبُّوۡنَ الۡمَالَ حُبًّا جَمًّا ؕ ٢۰ کَلَّاۤ اِذَا دُکَّتِ الۡاَرۡضُ دَکًّا دَکًّا ۙ ٢١ وَّجَآءَ رَبُّکَ وَالۡمَلَکُ صَفًّا صَفًّا ۚ ٢٢ وَجِایۡٓءَ یَوۡمَئِذٍۭ بِجَہَنَّمَ ۬ۙ یَوۡمَئِذٍ یَّتَذَکَّرُ الۡاِنۡسَانُ وَاَنّٰی لَہُ الذِّکۡرٰی ؕ ٢٣ یَقُوۡلُ یٰلَیۡتَنِیۡ قَدَّمۡتُ لِحَیَاتِیۡ ۚ ٢٤ فَیَوۡمَئِذٍ لَّا یُعَذِّبُ عَذَابَہٗۤ اَحَدٌ ۙ ٢٥ وَّلَا یُوۡثِقُ وَثَاقَہٗۤ اَحَدٌ ؕ ٢٦ یٰۤاَیَّتُہَا النَّفۡسُ الۡمُطۡمَئِنَّۃُ ٭ۖ ٢٧ ارۡجِعِیۡۤ اِلٰی رَبِّکِ رَاضِیَۃً مَّرۡضِیَّۃً ۚ ٢٨ فَادۡخُلِیۡ فِیۡ عِبٰدِیۡ ۙ ٢٩ وَادۡخُلِیۡ جَنَّتِیۡ ٪ ٣۰
সূরা ফাজরের বাংলা উচ্চারণ :
১. ওয়াল ফাজর।
২. ওয়া লায়া-লিন আশর।
৩. ওয়াশ-শাফা-ই ওয়াল ওয়াতর।
৪. ওয়াল্লাইলি ইযাইয়াছর।
৫. হাল ফী যা-লিকা কাছামুল লিযী হিজর।
৬.আলাম তারা কাইফা ফা‘আলা রাব্বুকা বি‘আ-দ।
৭. ইরামা যা-তিল ‘ইমা-দ।
৮.আল্লাতী লাম ইউখ-লাক-মিছলুহা-ফিল বিলা-দ।
৯. ওয়া ছামূদাল্লাযীনা জা-বুসসাখরা বিল ওয়া-দ।
১০. ওয়া ফির‘আউনা যীল আওতা-দ।
১১.আল্লাযীনা তাগাও ফিল বিলা-দ।
১২. ফা-আকছারূ ফীহাল ফাছা-দ।
১৩. ফাসাব্বা আলাইহিম রাব্বুকা ছাওতা ‘আযা-ব।
১৪. ইন্না রাব্বাকা লাবিলমিরসা-দ।
১৫. ফাআম্মাল ইনছা-নু-ইযা-মাবতালা-হু রাব্বুহু ফাআকরামাহূ-ওয়া না‘আমাহূ ফাইয়াকূলু রাববী-আকরামান।
১৬.ওয়া-আম্মা-ইযা-মাবতালা-হু ফাকাদারা ‘আলাইহি রিঝকাহূ ফা-ইয়াকূলু-রাববী আহা-নান।
১৭. কাল্লা-বাল্লা-তুকরিমূনাল ইয়াতীম।
১৮.ওয়া লা-তাহাদ্দূ না ‘আলা-তা‘আ-মিল মিছকীন।
১৯.ওয়া তা’কুলূনাত তুরা-ছা আকলাল্লাম্মা।
২০. ওয়া তুহিব্বুনাল মা-লা হুব্বান জাম্মা।
২১. কাল্লা-ইযা-দুক্কাতিল আরদু-দাক্কান দাক্কা।
২২. ওয়া জাআ রাব্বুকা ওয়াল মালাকু-সাফফান সাফফা।
২৩. ওয়া জীআ ইয়াওমাইযিম বিজাহান্নাম, ইয়াওমা-ইযিইঁ ইয়াতা-যাক্কারুল ইনছানু-ওয়া আন্না-লাহুযযিকরা।
২৪. ইয়া-কূলুইয়া-লাইতানী কাদ্দামতুলিহায়া-তী।
২৫. ফাইয়াওমা-ইযিল লা-ইউ‘আযযি বু‘আযা-বাহূ-আহাদ।
২৬.ওয়ালা-ইঊছিকু-ওয়াছা-কাহূআহাদ।
২৭. ইয়া-আইয়াতু-হান্নাফছুল মুতমাইন্নাহ।
২৮.ইর-জি‘ঈইলা-রাব্বিকি রা-দিয়াতাম মারদিইয়াহ।
২৯. ফাদখুলী ফী ‘ইবা-দী।
৩০. ওয়াদখুলী জান্নাতী।
সূরা ফাজরের বাংলা অর্থ :
শপথ ফজর-কালের। এবং দশ রাতের। এবং জোড় ও বেজোড়ের। এবং রাতের, যখন তা গত হতে শুরু করে (আখেরাতের শাস্তি ও পুরস্কার অবশ্যম্ভাবী)। একজন বোধসম্পন্ন ব্যক্তির (বিশ্বাস আনয়নের) জন্য এসব শপথ যথেষ্ট নয় কি? তুমি কি দেখনি তোমার প্রতিপালক আদ (জাতি)-এর প্রতি কী আচরণ করেছেন? ইরাম সম্প্রদায়ের প্রতি, যারা উঁচু উঁচু স্তম্ভের অধিকারী ছিল। যাদের সমান পৃথিবীতে আর কোন জাতিকে সৃষ্টি করা হয়নি? এবং (কী আচরণ করেছেন) ছামুদ (জাতি)-এর প্রতি, যারা উপত্যকায় বড়-বড় পাথর কেটে ফেলেছিল? এবং (কী আচরণ করেছেন) পেরেকওয়ালা ফিরাউনের প্রতি?
যারা দেশে-দেশে অবাধ্যতা প্রদর্শন করেছিল। এবং তাতে ব্যাপক অশান্তি বিস্তার করেছিল। ফলে তোমার প্রতিপালক তাদের উপর শাস্তির কষাঘাত হানলেন। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক সকলের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন।
কিন্তু মানুষের অবস্থা তো এই যে, যখন তার প্রতিপালক তাকে পরীক্ষা করেন এবং তাকে মর্যাদা ও অনুগ্রহ দান করেন তখন সে বলে, আমার প্রতিপালক আমাকে সম্মানিত করেছেন। এবং অপর দিকে যখন তাকে পরীক্ষা করেন এবং তার জীবিকা সঙ্কুচিত করে দেন, তখন সে বলে, আমার প্রতিপালক আমাকে অমর্যাদা করেছেন। কখনও এরূপ সমীচীন নয়। (কেবল এতটুকুই নয়;) বরং তোমরা ইয়াতীমকে সম্মান করো না। এবং মিসকীনদেরকে খাবার খাওয়ানোর জন্য একে অন্যকে উৎসাহিত করো না। এবং মীরাছের সম্পদ সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করে থাক। এবং ধন-সম্পদকে সীমাতিরিক্ত ভালোবাস।
কিছুতেই এরূপ সমীচীন নয়। যখন পৃথিবীকে পিষে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেলা হবে। কিছুতেই এরূপ সমীচীন নয়। যখন পৃথিবীকে পিষে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেলা হবে। সে দিন জাহান্নামকে সামনে আনা হবে। সে দিন মানুষ বুঝতে পারবে, কিন্তু সেই সময় বুঝে আসার দ্বারা তার কী ফায়দা? সে বলবে, হায়! আমি যদি আমার এই জীবনের জন্য কিছু অগ্রিম পাঠাতাম? সে দিন আল্লাহর শাস্তির মতো শাস্তি কেউ দিতে পারবে না। এবং তাঁর বাঁধার মত বাঁধতেও কেউ পারবে না।
(অবশ্য নেককারদেরকে বলা হবে,) হে (আল্লাহর ইবাদতে) প্রশান্তি লাভকারী চিত্ত! নিজ প্রতিপালকের দিকে ফিরে আস সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে।এবং আমার (নেক) বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। আর দাখিল হয়ে যাও আমার জান্নাতে। (সূরা ফাজর, আয়াত : ১-৩০)
Username: Islamic_status Published on 2024-12-07 12:09:49 ID NUMBER: 126115
সূরা কাউসার বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা কাউসার, পবিত্র কোরআনের সব থেকে ছোট সূরা। এর আয়াত সংখ্যা তিন। এটি মাক্কী সূরার অন্তর্ভুক্ত।
সূরা কাউসারে আল্লাহ তায়ালা রাসূল সা.-কে হাউজে কাউসারের সুসংবাদ দান করেছিলেন এবং তাঁর দুশমনদের শত্রুরতার জবাব দিয়েছিলেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ছেলে কাসেম বা ইবরাহিম শৈশবেই মারা যাওয়ার পর মক্কার কাফেরেরা আল্লাহর রাসূলকে নির্বংশ বলে দোষারোপ করতে লাগলো।
তাদের মধ্যে কাফির আস ইবনে ওয়ায়েলের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তার সামনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনও আলোচনা হলে সে বলতো, আরেহ, তার কথা বাদ দাও। সে তো কোনও চিন্তারই বিষয় নয়। কারণ, সে নির্বংশ। তার মৃত্যুর পর তার নাম উচ্চারণের মতো আর কেউ থাকবে না। এর প্রেক্ষিতে সূরা কাউসার নাজিল করেন আল্লাহ তায়ালা। -(ইবনে কাসির, মাযহারী)
সূরা কাউসার :
اِنَّاۤ اَعۡطَيۡنٰكَ الۡكَوۡثَرَؕ ١ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانۡحَرۡ ؕ ٢ اِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الۡاَبۡتَرُ
সূরা কাউসারের বাংলা উচ্চারণ :
১.ইন্নাআ‘তাইনা-কাল কাওছার।
২.ফা-সালিল লিরাব্বিকা ওয়ানহার।
৩. ইন্না শা-নিআকা হুওয়াল আবতার।সূরা
কাউসারের অর্থ :
নিশ্চয় আমি আপনাকে আল-কাউসার দান করেছি। কাজেই তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামায আদায় কর এবং কুরবানী কর। (তোমার নাম-চিহ্ন কোন দিন মুছবে না, বরং) তোমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীরাই নির্বংশ। (সূরা কাউসার, আয়াত : ১-৩)
সূরা কাফিরুনের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা কাফিরুন পবিত্র কোরআনের ১০৯ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ০৬। মক্কায় নাজিল হওয়া এই সূরাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সূরায় তাওহিদের শিক্ষা এবং মুশরিকদের সঙ্গে সম্পর্কহীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই সূরায় কাফিরদের লোভনীয় প্রস্তাব এবং তাদের ভ্রান্ত মতবাদ বাতিল ঘোষণা করা হয়।
সূরা কাফিরুন
قُلۡ یٰۤاَیُّہَا الۡکٰفِرُوۡنَ ۙ ١ لَاۤ اَعۡبُدُ مَا تَعۡبُدُوۡنَ ۙ ٢ وَلَاۤ اَنۡتُمۡ عٰبِدُوۡنَ مَاۤ اَعۡبُدُ ۚ ٣ وَلَاۤ اَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدۡتُّمۡ ۙ ٤ وَلَاۤ اَنۡتُمۡ عٰبِدُوۡنَ مَاۤ اَعۡبُدُ ؕ ٥ لَکُمۡ دِیۡنُکُمۡ وَلِیَ دِیۡنِ ٪ ٦
সূরা কাফিরুনের বাংলা উচ্চারণ
১. কুল ইয়া-আইয়ুহাল কা-ফিরূন।
২. লা-আ‘বুদুমা-তা‘বুদূন।
৩. ওয়ালা-আনতুম ‘আ-বিদূনা মাআ‘বুদ।
৪. ওয়ালা-আনা ‘আ-বিদুম মা-‘আবাত্তুম।
৫. ওয়ালা-আনতুম ‘আ-বিদূনা মাআ‘বুদ।
৬. লাকুম দীনুকুম ওয়ালিয়া দীন।
সূরা কাফিরুনের বাংলা অর্থ
বলে দাও, হে সত্য-অস্বীকারকারীগণ!আমি সেই সব বস্তুর ইবাদত করি না, যাদের ইবাদত তোমরা কর,এবং তোমরা তাঁর ইবাদত কর না যার ইবাদত আমি করি। এবং আমি (ভবিষ্যতে) তার ইবাদতকারী নই, যার ইবাদত তোমরা কর। এবং তোমরাও তার ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি। তোমাদের জন্য তোমাদের দীন এবং আমার জন্য আমার দীন। (সূরা কাফিরুন, আয়াত : ১-৬)
সূরা নাসরের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা নাসর পবিত্র কোরআনের ১১০ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা তিন। সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ। এই সূরায় মহানবী সা.-কে মক্কা বিজয়ের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। এইসঙ্গে দুনিয়ায় তার বেশি দিন হায়াত নেই তাও বুঝানো হয়েছিল। তাই তাকে আল্লাহ তায়ালার হামদ ও তাসবীহতে রত হয়ে এবং তাঁর কাছে মাগফিরাত প্রার্থনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূরা নাসর
اِذَا جَآءَ نَصۡرُ اللّٰہِ وَالۡفَتۡحُ ۙ ١ وَرَاَیۡتَ النَّاسَ یَدۡخُلُوۡنَ فِیۡ دِیۡنِ اللّٰہِ اَفۡوَاجًا ۙ ٢ فَسَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّکَ وَاسۡتَغۡفِرۡہُ ؕؔ اِنَّہٗ کَانَ تَوَّابًا ٪ ٣
সূরা নাসরের বাংলা উচ্চারণ
১. ইযা-জা-আ-নাসরুল্লা-হি ওয়াল ফাতহ।
২. ওয়া-রাআই-তান্না-ছা ইয়াদ-খুলূনা ফী দীনিল্লা-হি আফওয়া-জা।
৩. ফাছাব্বিহ-বিহামদি-রাব্বিকা ওয়াছ-তাগফিরহু-ইন্নাহূকা-না তাওওয়া-বা।
সূরা নাসরের বাংলা অর্থ
যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে। এবং তুমি মানুষকে দেখবে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করছে। তখন তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করো ও তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল। (সূরা নাসর, আয়াত : ১-৩)
সূরা লাহাবের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা লাহাব পবিত্র কোরআনের ১১১ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা পাঁচ। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ এবং কোরআনের ৩০ তম পারায় অবস্থিত।
সূরা লাহাবের শানে নুযুল
আল্লাহ তায়ালা যখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর এই আয়াত নাজিল করলেন- (وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ) ‘আর আপনি আপনার গোত্রের নিকটাত্মীয়দেরকে ভীতি প্রদর্শন করুন।’ (সূরা আশ-শু'আরা, আয়াত, ২১৪) তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাফা পর্বতে আরোহণ করে কোরাইশ গোত্রের লোকদের ডাক দিলেন।
ডাক শুনে কোরাইশ গোত্র পর্বতের পাদদেশে একত্রিত হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যদি আমি বলি যে, একটি শত্রুদল ক্রমশই এগিয়ে আসছে এবং সকাল বিকাল যে কোনো সময় তোমাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়বে, তবে তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে কি?
সবাই একবাক্যে বলে উঠল, হ্যাঁ, অবশ্যই বিশ্বাস করব। এরপর তিনি বললেন, আমি (শিরক ও কুফরের কারণে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত) এক ভীষণ আজাব সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করছি। এ কথা শুনে আবু লাহাব বলল, ধ্বংস হও তুমি, এজন্যেই কি আমাদেরকে একত্রিত করেছ? একথা বলে সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে পাথর মারতে উদ্যত হল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সূরা লাহাব অবতীর্ণ হয়। (বুখারি, হাদিস, ৪৯৭১, ৪৯৭২, মুসলিম, হাদিস, ২০৮)
সূরা লাহাব:
بّتَبَّتۡ یَدَاۤ اَبِیۡ لَہَبٍ وَّتَبَّ ؕ ١ مَاۤ اَغۡنٰی عَنۡہُ مَالُہٗ وَمَا کَسَبَ ؕ ٢ سَیَصۡلٰی نَارًا ذَاتَ لَہَبٍ ۚۖ ٣ وَّامۡرَاَتُہٗ ؕ حَمَّالَۃَ الۡحَطَبِ ۚ ٤ فِیۡ جِیۡدِہَا حَبۡلٌ مِّنۡ مَّسَدٍ
সূরা লাহাবের বাংলা উচ্চারণ :
১. তাব্বাত ইয়াদা-আবী লাহাবিওঁ ওয়া তাবব।
২. মা-আগনা-‘আনহু মা-লুহূ-ওয়ামা-কাছাব।
৩. ছা-ইয়াস-লা-না-রান যা-তা লাহাব।
৪. ওয়াম-রাআতুহূ; হাম্মা-লাতাল হাতাব।
৫. ফী জীদি-হা-হাবলুম মিম মাছাদ।
সূরা লাহাবের বাংলা অর্থ :
আবু লাহাবের দু’হাত ধ্বংস হোক এবং সে নিজে ধ্বংস হয়েই গেছে। তার সম্পদ ও তার উপার্জন তার কোন কাজে আসেনি। অচিরেই সে লেলিহান আগুনে প্রবেশ করবে। অচিরেই সে লেলিহান আগুনে প্রবেশ করবে। গলদেশে মুঞ্জ (তৃণ বিশেষ)-এর রশি লাগানো অবস্থায়। (সূরা লাহাব, আয়াত : ১-৫)
সূরা ইখলাসের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সুরা ইখলাস, পবিত্র কোরআনের অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও ছোট আয়াত বিশিষ্ট্য সূরাগুলোর একটি। এর আয়াত সংখ্যা চারটি। এটি মাক্কী সূরার অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তায়ালার সম্পর্কে কাফেরদের যথাযথ জ্ঞানের অভাব এবং আল্লাহর একত্ববাদের বর্ণনা করতে এই সূরা নাজিল হয়েছে। এই সুরার মাধ্যমে তাওহিদের আকিদাকে দৃঢ় ও প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।
এই সুরা ফজিলত সম্পর্কে অনেকগুলো হাদিস বর্ণিত হয়েছে, তবে এখানে এতটুকু বলাই যথেষ্ট হবে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিন শুরু করতেন এই সুরা তেলাওয়াতের মাধ্যমে এবং দিন শুরু করতেন এই সুরা তেলাওয়াতের মাধ্যমে। কারণ তিনি অধিকাংশ সময় ফজরের সুন্নাত ও সালাতুল বিতরে সুরা ইখলাস ও সুরা কাফিরুন তেলাওয়াত করতেন। (তাফসির ফী যিলালিল কোরআন ৬/৪০০৫)
সূরা ইখলাস :
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ - اللَّهُ الصَّمَدُ - لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ - وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
সূরা ইখলাসের বাংলা উচ্চারণ :
১. কুল হুয়াল্লাহু আহাদ।
২. আল্লাহুচ্ছামাদ।
৩.লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ।
৪. ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।’
সূরা ইখলাসের বাংলা অর্থ :
১. বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।
২. আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন।
৩. তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকেও জন্ম দেয়া হয়নি।
৪. আর তার কোন সমকক্ষও নেই। (সূরা ইখলাস, আয়াত : ১-৪)
সূরা ফালাকের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা ফালাক পবিত্র কোরআনের ১১৩ তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৫। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। শয়তানের আক্রমণ ও জাদুটোনাসহ সব ধরনের অনষ্টিতা থেকে মুক্ত থাকতে— এ সূরার নিয়মিত আমলই মানুষের জন্য যথেষ্ট।
সূরাটিতে মহান আল্লাহ তায়ালা তার কাছে আশ্রয় চাওয়ার কৌশল তুলে ধরেছেন। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় সূরাটির অনেক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ও উপকারিতা বর্ণনা করা হয়েছে। অর্থসহ সুরাটির উচ্চারণ তুলে ধরা হলো—
সূরা ফালাক
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ - مِن شَرِّ مَا خَلَقَ - وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ - وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ - وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ
সূরা ফালাকের বাংলা উচ্চারণ :
কুল আউজু বিরাব্বিল ফালাক্ব; মিন শাররি মা খালাক্ব; ওয়া মিন শাররি গাসিক্বিন ইজা ওয়াক্বাব; ওয়া মিন শাররিন নাফ্ফাছাতি ফিল উক্বাদ; ওয়া মিন শাররি হাসিদিন ইজা হাসাদ। (মাখরাজসহ বিশুদ্ধ উচ্চারণ শিখে নেয়া জরুরি)
সূরা ফালাকের বাংলা অর্থ :
বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকে। অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয়, গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে। (সূরা ফালাক, আয়াত : ১-৫)
সূরা নাসের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা নাস পবিত্র কোরআনের একটি ফজিলতপূর্ণ সূরা। সূরাটি কোরআনের ১১৪তম ও সর্বশেষ সূরা। এই সুরা মদিনায় অবতীর্ণ। এর আয়াত সংখ্যা ৬, রুকু ১।
ফজিলত
হাদিস শরিফে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তা পড়ার গুরুত্ব এসেছে। এক বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা সূরা ইখলাস ও এই দুই সূরা পড়বে সে সকল বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকবে। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৯০৩)
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রাতে যখন ঘুমাতে যেতেন, তখন নিজের উভয় হাত এক সঙ্গে মিলাতেন। তারপর উভয় হাতে ফুঁক দিতেন এবং সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস পড়তেন। তারপর দেহের যতটুকু অংশ সম্ভব হাত বুলিয়ে নিতেন। তিনি মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীরের সামনের অংশ থেকে শুরু করতেন। তিনি এরূপ তিনবার করতেন। -(সহি বুখারি, হাদিস : ৫০১৭)
সূরা নাস :
قُلۡ اَعُوۡذُ بِرَبِّ النَّاسِ ۙ﴿۱﴾ مَلِکِ النَّاسِ ۙ﴿۲﴾﴾اِلٰهِ النَّاسِ ۙ﴿۳﴾مِنۡ شَرِّ الۡوَسۡوَاسِ ۬ۙ الۡخَنَّاسِ ۪ۙ﴿۴﴾الَّذِیۡ یُوَسۡوِسُ فِیۡ صُدُوۡرِ النَّاسِ ۙ﴿۵﴾مِنَ الۡجِنَّۃِ وَ النَّاسِ ﴿۶
সূরা নাসের বাংলা উচ্চারণ :
১.কুল আউযু বিরাব্বিন নাস।
২. মালিকিন্ নাস।
৩. ইলাহিন্ নাস।
৪. মিন্ শররিল ওয়াস্ ওয়াসিল খান্নাস।
৫. আল্লাযী ইউওযাসবিসু ফী ছুদুরিন্নাস।
৬.মিনা জিন্নাতি ওয়ান্নাস। (মাখরাজসহ বিশুদ্ধ উচ্চারণ শিখে নেয়া জরুরি)
সূরা নাসের বাংলা অর্থ :
‘বলো, আমি শরণ নিচ্ছি মানুষের প্রতিপালকের, মানুষের অধীশ্বরের, মানুষের উপাস্যের, তার কুমন্ত্রণার অমঙ্গল হতে, যে সুযোগ মতো আসে ও সুযোগমতো সরে পড়ে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিন বা মানুষের মধ্য থেকে।’ (সূরা নাস, আয়াত : ১-৬)