সূরা আসরের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ :-
সূরা আল আসর পবিত্র কোরআনের ১০৩ নম্বর সূরা। এই সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ৩ টি। আসর একটি আরবি শব্দ। আসর-এর বাংলা অর্থ-যুগ।
সূরা আসর
وَالۡعَصۡرِ ۙ ١ اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَفِیۡ خُسۡرٍ ۙ ٢ اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَتَوَاصَوۡا بِالۡحَقِّ ۬ۙ وَتَوَاصَوۡا بِالصَّبۡرِ ٪ ٣
সূরা আল-আসর বাংলা উচ্চারণ :
১. ওয়াল ‘আসর।
২. ইন্নাল ইনছা-না লাফী খুছর।
৩. ইল্লাল্লাযীনা আ-মানূ -ওয়া -আমিলুসসা-লিহা-তি ওয়া তাওয়া-সাওবিল হাক্কি ওয়া তাওয়া-সাও বিসসাবরি।
সূরা আল-আসর বাংলা অনুবাদ
১. কসম যুগের (সময়ের),
২. নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;
৩. কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের। (সূরা আসর, আয়াত : ১-৩)
সূরা হুমাযার বাংলা অর্থ ও উচ্চারণ:-
সূরা হুমাযা পবিত্র কোরআনে ১০৪ নম্বর সূরা। এর অর্থ : পরনিন্দাকারী। এর আয়াত সংখ্যা ৯টি। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ ও পবিত্র কোরআনের ৩০তম পারায় অবস্থিত।
সূরা হুমাযা
وَیۡلٌ لِّکُلِّ ہُمَزَۃٍ لُّمَزَۃِۣ ۙ ١ الَّذِیۡ جَمَعَ مَالًا وَّعَدَّدَہٗ ۙ ٢ یَحۡسَبُ اَنَّ مَالَہٗۤ اَخۡلَدَہٗ ۚ ٣ کَلَّا لَیُنۡۢبَذَنَّ فِی الۡحُطَمَۃِ ۫ۖ ٤ وَمَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا الۡحُطَمَۃُ ؕ ٥ نَارُ اللّٰہِ الۡمُوۡقَدَۃُ ۙ ٦ الَّتِیۡ تَطَّلِعُ عَلَی الۡاَفۡـِٕدَۃِ ؕ ٧ اِنَّہَا عَلَیۡہِمۡ مُّؤۡصَدَۃٌ ۙ ٨ فِیۡ عَمَدٍ مُّمَدَّدَۃٍ ٪ ٩
সূরা হুমাযা বাংলা উচ্চারণ :
ওয়াই-লুলিলকুল্লি হুমাঝাতিল লুমাঝাহ । আল্লাযী জামা‘আ মা-লাওঁ‘ওয়া ‘আদ্দাদাহ। ইয়াহ-ছাবুআন্না মা-লাহূআখলাদাহ। কাল্লা-লাইউমবাযান্না ফিল হুতামাহ। ওয়ামাআদরা-কা মাল হুতামাহ। না-রুল্লা-হিল মূকাদাহ। আল্লাতী তাত্তালি‘উ আলাল আফইদাহ। ইন্নাহা-‘আলাইহিম মু’সাদাহ। ফী ‘আমাদিম মুমাদ্দাদাহ।
সূরা হুমাযা অর্থ :
বহু দুঃখ আছে প্রত্যেক এমন ব্যক্তির, যে পেছনে অন্যের বদনাম করে (এবং) মুখের উপরও নিন্দা করে। যে অর্থ সঞ্চয় করে ও তা বারবার গুণে দেখে। সে মনে করে তার সম্পদ তাকে চিরজীবি করে রাখবে। কক্ষণও নয়। তাকে তো এমন স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, যা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেলে। তুমি কি জান সেই চূর্ণ-বিচূর্ণকারী জিনিস কী? তা আল্লাহর প্রজ্বলিত আগুন। যা হৃদয় পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। নিশ্চয়ই তা তাদের উপর আবদ্ধ করে রাখা হবে। যখন তারা (আগুনের) লম্বা-চওড়া স্তম্ভসমূহের মধ্যে (পরিবেষ্টিত) থাকবে। (সূরা হুমাযা, আয়াত : ১-৯)
এই সূরায় তিনটি জঘন্য গুনাহের শাস্তি ও তার তীব্রতা বর্ণিত হয়েছে। গুনাহ তিনটি হচ্ছে- جَمَعَ مَالًا هُمَزَة لُمَزَة (‘হুমাযাহ, লুমাযাহ ও জামাআ মালা’)। অর্থাৎ, কাউকে দোষারোপ করা, পেছনে নিন্দা করা ও সম্পদ জমা করা।
এই তিন জঘন্য গুনাহের শাস্তি সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,এই অপরাধে জড়িতদের ‘হুত্বামাহ’ নামের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। এই জাহান্নামের আগুন এমন হবে যে, তা মানুষের হৃদয়কে পর্যন্ত গ্ৰাস করবে। হৃদয় পর্যন্ত এই আগুন পৌঁছে যাবার অর্থ হচ্ছে এই যে, এই আগুন এমন জায়গায় পৌছে যাবে যেখানে মানুষের অসৎচিন্তা, ভুল আকীদা-বিশ্বাস, অপবিত্র ইচ্ছা, বাসনা, প্রবৃত্তি, আবেগ এবং দুষ্ট সংকল্প ও নিয়তের কেন্দ্র। (ফাতহুল কাদীর)
সূরা কুরাইশ বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা কুরাইশ পবিত্র কোরআনের ১০৬ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৪। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। কুরাইশ একটি গোত্রের নাম। নদীর ইবন কিনানার সন্তানদেরকে কুরাইশ বলা হয়। যারাই নদীর ইবনে কিনানাহ-এর বংশধর তারাই কুরাইশ নামে অভিহিত।
হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা ইসমাঈলের বংশধর থেকে কিনানাহকে, কিনানাহর বংশধর থেকে কুরাইশকে, কুরাইশ থেকে বনী হাশেমকে, বনী হাশেম থেকে আমাকে পছন্দ করেছেন।’ (মুসলিম, হাদিস, ২২৭৬)
এই সূরায় কুরাইশদের একটি বিশেষ অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে তাদেরকে আল্লাহর ইবাদতের প্রতি গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।
সূরা কুরাইশ
لِاِیۡلٰفِ قُرَیۡشٍ ۙ ١ اٖلٰفِہِمۡ رِحۡلَۃَ الشِّتَآءِ وَالصَّیۡفِ ۚ ٢ فَلۡیَعۡبُدُوۡا رَبَّ ہٰذَا الۡبَیۡتِ ۙ ٣ الَّذِیۡۤ اَطۡعَمَہُمۡ مِّنۡ جُوۡعٍ ۬ۙ وَّاٰمَنَہُمۡ مِّنۡ خَوۡفٍ ٪ ٤
সূরা কুরাইশের বাংলা উচ্চারণ
১. লি-ঈলা-ফি কুরাইশ।
২. ঈলা-ফিহিম রিহ-লাতাশ-শিতাই ওয়াস-সাঈফ।
৩. ফাল-ইয়া-বুদূ-রাব্বা হা-যাল বাঈত।
৪. আল্লাযী-আতা‘আমাহুম মিন জূ‘ইওঁ ওয়া আ-মানাহুম মিন খাওফ।
সূরা কুরাইশের বাংলা অর্থ
যেহেতু কুরাইশের লোকেরা অভ্যস্ত। অর্থাৎ তারা শীত ও গ্রীষ্মকালে (ইয়ামান ও শামে) সফর করতে অভ্যস্ত। তাই তারা যেন এই ঘরের মালিকের ইবাদত করে। যিনি তাদেরকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় খাদ্য দিয়েছেন এবং ভয়-ভীতি হতে তাদেরকে নিরাপদ রেখেছেন। (সূরা কুরাইশ, আয়াত : ১-৪)
সূরা কাউসার বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা কাউসার, পবিত্র কোরআনের সব থেকে ছোট সূরা। এর আয়াত সংখ্যা তিন। এটি মাক্কী সূরার অন্তর্ভুক্ত।
সূরা কাউসারে আল্লাহ তায়ালা রাসূল সা.-কে হাউজে কাউসারের সুসংবাদ দান করেছিলেন এবং তাঁর দুশমনদের শত্রুরতার জবাব দিয়েছিলেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ছেলে কাসেম বা ইবরাহিম শৈশবেই মারা যাওয়ার পর মক্কার কাফেরেরা আল্লাহর রাসূলকে নির্বংশ বলে দোষারোপ করতে লাগলো।
তাদের মধ্যে কাফির আস ইবনে ওয়ায়েলের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তার সামনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনও আলোচনা হলে সে বলতো, আরেহ, তার কথা বাদ দাও। সে তো কোনও চিন্তারই বিষয় নয়। কারণ, সে নির্বংশ। তার মৃত্যুর পর তার নাম উচ্চারণের মতো আর কেউ থাকবে না। এর প্রেক্ষিতে সূরা কাউসার নাজিল করেন আল্লাহ তায়ালা। -(ইবনে কাসির, মাযহারী)
সূরা কাউসার :
اِنَّاۤ اَعۡطَيۡنٰكَ الۡكَوۡثَرَؕ ١ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانۡحَرۡ ؕ ٢ اِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الۡاَبۡتَرُ
সূরা কাউসারের বাংলা উচ্চারণ :
১.ইন্নাআ‘তাইনা-কাল কাওছার।
২.ফা-সালিল লিরাব্বিকা ওয়ানহার।
৩. ইন্না শা-নিআকা হুওয়াল আবতার।সূরা
কাউসারের অর্থ :
নিশ্চয় আমি আপনাকে আল-কাউসার দান করেছি। কাজেই তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামায আদায় কর এবং কুরবানী কর। (তোমার নাম-চিহ্ন কোন দিন মুছবে না, বরং) তোমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীরাই নির্বংশ। (সূরা কাউসার, আয়াত : ১-৩)
সূরা কাফিরুনের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা কাফিরুন পবিত্র কোরআনের ১০৯ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ০৬। মক্কায় নাজিল হওয়া এই সূরাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সূরায় তাওহিদের শিক্ষা এবং মুশরিকদের সঙ্গে সম্পর্কহীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই সূরায় কাফিরদের লোভনীয় প্রস্তাব এবং তাদের ভ্রান্ত মতবাদ বাতিল ঘোষণা করা হয়।
সূরা কাফিরুন
قُلۡ یٰۤاَیُّہَا الۡکٰفِرُوۡنَ ۙ ١ لَاۤ اَعۡبُدُ مَا تَعۡبُدُوۡنَ ۙ ٢ وَلَاۤ اَنۡتُمۡ عٰبِدُوۡنَ مَاۤ اَعۡبُدُ ۚ ٣ وَلَاۤ اَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدۡتُّمۡ ۙ ٤ وَلَاۤ اَنۡتُمۡ عٰبِدُوۡنَ مَاۤ اَعۡبُدُ ؕ ٥ لَکُمۡ دِیۡنُکُمۡ وَلِیَ دِیۡنِ ٪ ٦
সূরা কাফিরুনের বাংলা উচ্চারণ
১. কুল ইয়া-আইয়ুহাল কা-ফিরূন।
২. লা-আ‘বুদুমা-তা‘বুদূন।
৩. ওয়ালা-আনতুম ‘আ-বিদূনা মাআ‘বুদ।
৪. ওয়ালা-আনা ‘আ-বিদুম মা-‘আবাত্তুম।
৫. ওয়ালা-আনতুম ‘আ-বিদূনা মাআ‘বুদ।
৬. লাকুম দীনুকুম ওয়ালিয়া দীন।
সূরা কাফিরুনের বাংলা অর্থ
বলে দাও, হে সত্য-অস্বীকারকারীগণ!আমি সেই সব বস্তুর ইবাদত করি না, যাদের ইবাদত তোমরা কর,এবং তোমরা তাঁর ইবাদত কর না যার ইবাদত আমি করি। এবং আমি (ভবিষ্যতে) তার ইবাদতকারী নই, যার ইবাদত তোমরা কর। এবং তোমরাও তার ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি। তোমাদের জন্য তোমাদের দীন এবং আমার জন্য আমার দীন। (সূরা কাফিরুন, আয়াত : ১-৬)
সূরা নাসরের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা নাসর পবিত্র কোরআনের ১১০ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা তিন। সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ। এই সূরায় মহানবী সা.-কে মক্কা বিজয়ের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। এইসঙ্গে দুনিয়ায় তার বেশি দিন হায়াত নেই তাও বুঝানো হয়েছিল। তাই তাকে আল্লাহ তায়ালার হামদ ও তাসবীহতে রত হয়ে এবং তাঁর কাছে মাগফিরাত প্রার্থনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূরা নাসর
اِذَا جَآءَ نَصۡرُ اللّٰہِ وَالۡفَتۡحُ ۙ ١ وَرَاَیۡتَ النَّاسَ یَدۡخُلُوۡنَ فِیۡ دِیۡنِ اللّٰہِ اَفۡوَاجًا ۙ ٢ فَسَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّکَ وَاسۡتَغۡفِرۡہُ ؕؔ اِنَّہٗ کَانَ تَوَّابًا ٪ ٣
সূরা নাসরের বাংলা উচ্চারণ
১. ইযা-জা-আ-নাসরুল্লা-হি ওয়াল ফাতহ।
২. ওয়া-রাআই-তান্না-ছা ইয়াদ-খুলূনা ফী দীনিল্লা-হি আফওয়া-জা।
৩. ফাছাব্বিহ-বিহামদি-রাব্বিকা ওয়াছ-তাগফিরহু-ইন্নাহূকা-না তাওওয়া-বা।
সূরা নাসরের বাংলা অর্থ
যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে। এবং তুমি মানুষকে দেখবে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করছে। তখন তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করো ও তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল। (সূরা নাসর, আয়াত : ১-৩)
সূরা লাহাবের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা লাহাব পবিত্র কোরআনের ১১১ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা পাঁচ। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ এবং কোরআনের ৩০ তম পারায় অবস্থিত।
সূরা লাহাবের শানে নুযুল
আল্লাহ তায়ালা যখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর এই আয়াত নাজিল করলেন- (وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ) ‘আর আপনি আপনার গোত্রের নিকটাত্মীয়দেরকে ভীতি প্রদর্শন করুন।’ (সূরা আশ-শু'আরা, আয়াত, ২১৪) তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাফা পর্বতে আরোহণ করে কোরাইশ গোত্রের লোকদের ডাক দিলেন।
ডাক শুনে কোরাইশ গোত্র পর্বতের পাদদেশে একত্রিত হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যদি আমি বলি যে, একটি শত্রুদল ক্রমশই এগিয়ে আসছে এবং সকাল বিকাল যে কোনো সময় তোমাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়বে, তবে তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে কি?
সবাই একবাক্যে বলে উঠল, হ্যাঁ, অবশ্যই বিশ্বাস করব। এরপর তিনি বললেন, আমি (শিরক ও কুফরের কারণে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত) এক ভীষণ আজাব সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করছি। এ কথা শুনে আবু লাহাব বলল, ধ্বংস হও তুমি, এজন্যেই কি আমাদেরকে একত্রিত করেছ? একথা বলে সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে পাথর মারতে উদ্যত হল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সূরা লাহাব অবতীর্ণ হয়। (বুখারি, হাদিস, ৪৯৭১, ৪৯৭২, মুসলিম, হাদিস, ২০৮)
সূরা লাহাব:
بّتَبَّتۡ یَدَاۤ اَبِیۡ لَہَبٍ وَّتَبَّ ؕ ١ مَاۤ اَغۡنٰی عَنۡہُ مَالُہٗ وَمَا کَسَبَ ؕ ٢ سَیَصۡلٰی نَارًا ذَاتَ لَہَبٍ ۚۖ ٣ وَّامۡرَاَتُہٗ ؕ حَمَّالَۃَ الۡحَطَبِ ۚ ٤ فِیۡ جِیۡدِہَا حَبۡلٌ مِّنۡ مَّسَدٍ
সূরা লাহাবের বাংলা উচ্চারণ :
১. তাব্বাত ইয়াদা-আবী লাহাবিওঁ ওয়া তাবব।
২. মা-আগনা-‘আনহু মা-লুহূ-ওয়ামা-কাছাব।
৩. ছা-ইয়াস-লা-না-রান যা-তা লাহাব।
৪. ওয়াম-রাআতুহূ; হাম্মা-লাতাল হাতাব।
৫. ফী জীদি-হা-হাবলুম মিম মাছাদ।
সূরা লাহাবের বাংলা অর্থ :
আবু লাহাবের দু’হাত ধ্বংস হোক এবং সে নিজে ধ্বংস হয়েই গেছে। তার সম্পদ ও তার উপার্জন তার কোন কাজে আসেনি। অচিরেই সে লেলিহান আগুনে প্রবেশ করবে। অচিরেই সে লেলিহান আগুনে প্রবেশ করবে। গলদেশে মুঞ্জ (তৃণ বিশেষ)-এর রশি লাগানো অবস্থায়। (সূরা লাহাব, আয়াত : ১-৫)
সূরা ইখলাসের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সুরা ইখলাস, পবিত্র কোরআনের অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও ছোট আয়াত বিশিষ্ট্য সূরাগুলোর একটি। এর আয়াত সংখ্যা চারটি। এটি মাক্কী সূরার অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তায়ালার সম্পর্কে কাফেরদের যথাযথ জ্ঞানের অভাব এবং আল্লাহর একত্ববাদের বর্ণনা করতে এই সূরা নাজিল হয়েছে। এই সুরার মাধ্যমে তাওহিদের আকিদাকে দৃঢ় ও প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।
এই সুরা ফজিলত সম্পর্কে অনেকগুলো হাদিস বর্ণিত হয়েছে, তবে এখানে এতটুকু বলাই যথেষ্ট হবে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিন শুরু করতেন এই সুরা তেলাওয়াতের মাধ্যমে এবং দিন শুরু করতেন এই সুরা তেলাওয়াতের মাধ্যমে। কারণ তিনি অধিকাংশ সময় ফজরের সুন্নাত ও সালাতুল বিতরে সুরা ইখলাস ও সুরা কাফিরুন তেলাওয়াত করতেন। (তাফসির ফী যিলালিল কোরআন ৬/৪০০৫)
সূরা ইখলাস :
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ - اللَّهُ الصَّمَدُ - لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ - وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
সূরা ইখলাসের বাংলা উচ্চারণ :
১. কুল হুয়াল্লাহু আহাদ।
২. আল্লাহুচ্ছামাদ।
৩.লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ।
৪. ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।’
সূরা ইখলাসের বাংলা অর্থ :
১. বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।
২. আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন।
৩. তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকেও জন্ম দেয়া হয়নি।
৪. আর তার কোন সমকক্ষও নেই। (সূরা ইখলাস, আয়াত : ১-৪)
সূরা আসরের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ :-
সূরা আল আসর পবিত্র কোরআনের ১০৩ নম্বর সূরা। এই সূরার মোট আয়াত সংখ্যা ৩ টি। আসর একটি আরবি শব্দ। আসর-এর বাংলা অর্থ-যুগ।
সূরা আসর
وَالۡعَصۡرِ ۙ ١ اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَفِیۡ خُسۡرٍ ۙ ٢ اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَتَوَاصَوۡا بِالۡحَقِّ ۬ۙ وَتَوَاصَوۡا بِالصَّبۡرِ ٪ ٣
সূরা আল-আসর বাংলা উচ্চারণ :
১. ওয়াল ‘আসর।
২. ইন্নাল ইনছা-না লাফী খুছর।
৩. ইল্লাল্লাযীনা আ-মানূ -ওয়া -আমিলুসসা-লিহা-তি ওয়া তাওয়া-সাওবিল হাক্কি ওয়া তাওয়া-সাও বিসসাবরি।
সূরা আল-আসর বাংলা অনুবাদ
১. কসম যুগের (সময়ের),
২. নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;
৩. কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের। (সূরা আসর, আয়াত : ১-৩)
সূরা হুমাযার বাংলা অর্থ ও উচ্চারণ:-
সূরা হুমাযা পবিত্র কোরআনে ১০৪ নম্বর সূরা। এর অর্থ : পরনিন্দাকারী। এর আয়াত সংখ্যা ৯টি। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ ও পবিত্র কোরআনের ৩০তম পারায় অবস্থিত।
সূরা হুমাযা
وَیۡلٌ لِّکُلِّ ہُمَزَۃٍ لُّمَزَۃِۣ ۙ ١ الَّذِیۡ جَمَعَ مَالًا وَّعَدَّدَہٗ ۙ ٢ یَحۡسَبُ اَنَّ مَالَہٗۤ اَخۡلَدَہٗ ۚ ٣ کَلَّا لَیُنۡۢبَذَنَّ فِی الۡحُطَمَۃِ ۫ۖ ٤ وَمَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا الۡحُطَمَۃُ ؕ ٥ نَارُ اللّٰہِ الۡمُوۡقَدَۃُ ۙ ٦ الَّتِیۡ تَطَّلِعُ عَلَی الۡاَفۡـِٕدَۃِ ؕ ٧ اِنَّہَا عَلَیۡہِمۡ مُّؤۡصَدَۃٌ ۙ ٨ فِیۡ عَمَدٍ مُّمَدَّدَۃٍ ٪ ٩
সূরা হুমাযা বাংলা উচ্চারণ :
ওয়াই-লুলিলকুল্লি হুমাঝাতিল লুমাঝাহ । আল্লাযী জামা‘আ মা-লাওঁ‘ওয়া ‘আদ্দাদাহ। ইয়াহ-ছাবুআন্না মা-লাহূআখলাদাহ। কাল্লা-লাইউমবাযান্না ফিল হুতামাহ। ওয়ামাআদরা-কা মাল হুতামাহ। না-রুল্লা-হিল মূকাদাহ। আল্লাতী তাত্তালি‘উ আলাল আফইদাহ। ইন্নাহা-‘আলাইহিম মু’সাদাহ। ফী ‘আমাদিম মুমাদ্দাদাহ।
সূরা হুমাযা অর্থ :
বহু দুঃখ আছে প্রত্যেক এমন ব্যক্তির, যে পেছনে অন্যের বদনাম করে (এবং) মুখের উপরও নিন্দা করে। যে অর্থ সঞ্চয় করে ও তা বারবার গুণে দেখে। সে মনে করে তার সম্পদ তাকে চিরজীবি করে রাখবে। কক্ষণও নয়। তাকে তো এমন স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, যা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেলে। তুমি কি জান সেই চূর্ণ-বিচূর্ণকারী জিনিস কী? তা আল্লাহর প্রজ্বলিত আগুন। যা হৃদয় পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। নিশ্চয়ই তা তাদের উপর আবদ্ধ করে রাখা হবে। যখন তারা (আগুনের) লম্বা-চওড়া স্তম্ভসমূহের মধ্যে (পরিবেষ্টিত) থাকবে। (সূরা হুমাযা, আয়াত : ১-৯)
এই সূরায় তিনটি জঘন্য গুনাহের শাস্তি ও তার তীব্রতা বর্ণিত হয়েছে। গুনাহ তিনটি হচ্ছে- جَمَعَ مَالًا هُمَزَة لُمَزَة (‘হুমাযাহ, লুমাযাহ ও জামাআ মালা’)। অর্থাৎ, কাউকে দোষারোপ করা, পেছনে নিন্দা করা ও সম্পদ জমা করা।
এই তিন জঘন্য গুনাহের শাস্তি সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,এই অপরাধে জড়িতদের ‘হুত্বামাহ’ নামের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। এই জাহান্নামের আগুন এমন হবে যে, তা মানুষের হৃদয়কে পর্যন্ত গ্ৰাস করবে। হৃদয় পর্যন্ত এই আগুন পৌঁছে যাবার অর্থ হচ্ছে এই যে, এই আগুন এমন জায়গায় পৌছে যাবে যেখানে মানুষের অসৎচিন্তা, ভুল আকীদা-বিশ্বাস, অপবিত্র ইচ্ছা, বাসনা, প্রবৃত্তি, আবেগ এবং দুষ্ট সংকল্প ও নিয়তের কেন্দ্র। (ফাতহুল কাদীর)
সূরা কুরাইশ বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা কুরাইশ পবিত্র কোরআনের ১০৬ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৪। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। কুরাইশ একটি গোত্রের নাম। নদীর ইবন কিনানার সন্তানদেরকে কুরাইশ বলা হয়। যারাই নদীর ইবনে কিনানাহ-এর বংশধর তারাই কুরাইশ নামে অভিহিত।
হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা ইসমাঈলের বংশধর থেকে কিনানাহকে, কিনানাহর বংশধর থেকে কুরাইশকে, কুরাইশ থেকে বনী হাশেমকে, বনী হাশেম থেকে আমাকে পছন্দ করেছেন।’ (মুসলিম, হাদিস, ২২৭৬)
এই সূরায় কুরাইশদের একটি বিশেষ অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে তাদেরকে আল্লাহর ইবাদতের প্রতি গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।
সূরা কুরাইশ
لِاِیۡلٰفِ قُرَیۡشٍ ۙ ١ اٖلٰفِہِمۡ رِحۡلَۃَ الشِّتَآءِ وَالصَّیۡفِ ۚ ٢ فَلۡیَعۡبُدُوۡا رَبَّ ہٰذَا الۡبَیۡتِ ۙ ٣ الَّذِیۡۤ اَطۡعَمَہُمۡ مِّنۡ جُوۡعٍ ۬ۙ وَّاٰمَنَہُمۡ مِّنۡ خَوۡفٍ ٪ ٤
সূরা কুরাইশের বাংলা উচ্চারণ
১. লি-ঈলা-ফি কুরাইশ।
২. ঈলা-ফিহিম রিহ-লাতাশ-শিতাই ওয়াস-সাঈফ।
৩. ফাল-ইয়া-বুদূ-রাব্বা হা-যাল বাঈত।
৪. আল্লাযী-আতা‘আমাহুম মিন জূ‘ইওঁ ওয়া আ-মানাহুম মিন খাওফ।
সূরা কুরাইশের বাংলা অর্থ
যেহেতু কুরাইশের লোকেরা অভ্যস্ত। অর্থাৎ তারা শীত ও গ্রীষ্মকালে (ইয়ামান ও শামে) সফর করতে অভ্যস্ত। তাই তারা যেন এই ঘরের মালিকের ইবাদত করে। যিনি তাদেরকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় খাদ্য দিয়েছেন এবং ভয়-ভীতি হতে তাদেরকে নিরাপদ রেখেছেন। (সূরা কুরাইশ, আয়াত : ১-৪)
সূরা কাউসার বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা কাউসার, পবিত্র কোরআনের সব থেকে ছোট সূরা। এর আয়াত সংখ্যা তিন। এটি মাক্কী সূরার অন্তর্ভুক্ত।
সূরা কাউসারে আল্লাহ তায়ালা রাসূল সা.-কে হাউজে কাউসারের সুসংবাদ দান করেছিলেন এবং তাঁর দুশমনদের শত্রুরতার জবাব দিয়েছিলেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ছেলে কাসেম বা ইবরাহিম শৈশবেই মারা যাওয়ার পর মক্কার কাফেরেরা আল্লাহর রাসূলকে নির্বংশ বলে দোষারোপ করতে লাগলো।
তাদের মধ্যে কাফির আস ইবনে ওয়ায়েলের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তার সামনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনও আলোচনা হলে সে বলতো, আরেহ, তার কথা বাদ দাও। সে তো কোনও চিন্তারই বিষয় নয়। কারণ, সে নির্বংশ। তার মৃত্যুর পর তার নাম উচ্চারণের মতো আর কেউ থাকবে না। এর প্রেক্ষিতে সূরা কাউসার নাজিল করেন আল্লাহ তায়ালা। -(ইবনে কাসির, মাযহারী)
সূরা কাউসার :
اِنَّاۤ اَعۡطَيۡنٰكَ الۡكَوۡثَرَؕ ١ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانۡحَرۡ ؕ ٢ اِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الۡاَبۡتَرُ
সূরা কাউসারের বাংলা উচ্চারণ :
১.ইন্নাআ‘তাইনা-কাল কাওছার।
২.ফা-সালিল লিরাব্বিকা ওয়ানহার।
৩. ইন্না শা-নিআকা হুওয়াল আবতার।সূরা
কাউসারের অর্থ :
নিশ্চয় আমি আপনাকে আল-কাউসার দান করেছি। কাজেই তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামায আদায় কর এবং কুরবানী কর। (তোমার নাম-চিহ্ন কোন দিন মুছবে না, বরং) তোমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীরাই নির্বংশ। (সূরা কাউসার, আয়াত : ১-৩)
সূরা কাফিরুনের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা কাফিরুন পবিত্র কোরআনের ১০৯ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ০৬। মক্কায় নাজিল হওয়া এই সূরাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সূরায় তাওহিদের শিক্ষা এবং মুশরিকদের সঙ্গে সম্পর্কহীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই সূরায় কাফিরদের লোভনীয় প্রস্তাব এবং তাদের ভ্রান্ত মতবাদ বাতিল ঘোষণা করা হয়।
সূরা কাফিরুন
قُلۡ یٰۤاَیُّہَا الۡکٰفِرُوۡنَ ۙ ١ لَاۤ اَعۡبُدُ مَا تَعۡبُدُوۡنَ ۙ ٢ وَلَاۤ اَنۡتُمۡ عٰبِدُوۡنَ مَاۤ اَعۡبُدُ ۚ ٣ وَلَاۤ اَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدۡتُّمۡ ۙ ٤ وَلَاۤ اَنۡتُمۡ عٰبِدُوۡنَ مَاۤ اَعۡبُدُ ؕ ٥ لَکُمۡ دِیۡنُکُمۡ وَلِیَ دِیۡنِ ٪ ٦
সূরা কাফিরুনের বাংলা উচ্চারণ
১. কুল ইয়া-আইয়ুহাল কা-ফিরূন।
২. লা-আ‘বুদুমা-তা‘বুদূন।
৩. ওয়ালা-আনতুম ‘আ-বিদূনা মাআ‘বুদ।
৪. ওয়ালা-আনা ‘আ-বিদুম মা-‘আবাত্তুম।
৫. ওয়ালা-আনতুম ‘আ-বিদূনা মাআ‘বুদ।
৬. লাকুম দীনুকুম ওয়ালিয়া দীন।
সূরা কাফিরুনের বাংলা অর্থ
বলে দাও, হে সত্য-অস্বীকারকারীগণ!আমি সেই সব বস্তুর ইবাদত করি না, যাদের ইবাদত তোমরা কর,এবং তোমরা তাঁর ইবাদত কর না যার ইবাদত আমি করি। এবং আমি (ভবিষ্যতে) তার ইবাদতকারী নই, যার ইবাদত তোমরা কর। এবং তোমরাও তার ইবাদতকারী নও, যার ইবাদত আমি করি। তোমাদের জন্য তোমাদের দীন এবং আমার জন্য আমার দীন। (সূরা কাফিরুন, আয়াত : ১-৬)
সূরা নাসরের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা নাসর পবিত্র কোরআনের ১১০ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা তিন। সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ। এই সূরায় মহানবী সা.-কে মক্কা বিজয়ের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। এইসঙ্গে দুনিয়ায় তার বেশি দিন হায়াত নেই তাও বুঝানো হয়েছিল। তাই তাকে আল্লাহ তায়ালার হামদ ও তাসবীহতে রত হয়ে এবং তাঁর কাছে মাগফিরাত প্রার্থনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূরা নাসর
اِذَا جَآءَ نَصۡرُ اللّٰہِ وَالۡفَتۡحُ ۙ ١ وَرَاَیۡتَ النَّاسَ یَدۡخُلُوۡنَ فِیۡ دِیۡنِ اللّٰہِ اَفۡوَاجًا ۙ ٢ فَسَبِّحۡ بِحَمۡدِ رَبِّکَ وَاسۡتَغۡفِرۡہُ ؕؔ اِنَّہٗ کَانَ تَوَّابًا ٪ ٣
সূরা নাসরের বাংলা উচ্চারণ
১. ইযা-জা-আ-নাসরুল্লা-হি ওয়াল ফাতহ।
২. ওয়া-রাআই-তান্না-ছা ইয়াদ-খুলূনা ফী দীনিল্লা-হি আফওয়া-জা।
৩. ফাছাব্বিহ-বিহামদি-রাব্বিকা ওয়াছ-তাগফিরহু-ইন্নাহূকা-না তাওওয়া-বা।
সূরা নাসরের বাংলা অর্থ
যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে। এবং তুমি মানুষকে দেখবে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করছে। তখন তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করো ও তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল। (সূরা নাসর, আয়াত : ১-৩)
সূরা লাহাবের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সূরা লাহাব পবিত্র কোরআনের ১১১ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা পাঁচ। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ এবং কোরআনের ৩০ তম পারায় অবস্থিত।
সূরা লাহাবের শানে নুযুল
আল্লাহ তায়ালা যখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর এই আয়াত নাজিল করলেন- (وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ) ‘আর আপনি আপনার গোত্রের নিকটাত্মীয়দেরকে ভীতি প্রদর্শন করুন।’ (সূরা আশ-শু'আরা, আয়াত, ২১৪) তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাফা পর্বতে আরোহণ করে কোরাইশ গোত্রের লোকদের ডাক দিলেন।
ডাক শুনে কোরাইশ গোত্র পর্বতের পাদদেশে একত্রিত হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যদি আমি বলি যে, একটি শত্রুদল ক্রমশই এগিয়ে আসছে এবং সকাল বিকাল যে কোনো সময় তোমাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়বে, তবে তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে কি?
সবাই একবাক্যে বলে উঠল, হ্যাঁ, অবশ্যই বিশ্বাস করব। এরপর তিনি বললেন, আমি (শিরক ও কুফরের কারণে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত) এক ভীষণ আজাব সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করছি। এ কথা শুনে আবু লাহাব বলল, ধ্বংস হও তুমি, এজন্যেই কি আমাদেরকে একত্রিত করেছ? একথা বলে সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে পাথর মারতে উদ্যত হল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সূরা লাহাব অবতীর্ণ হয়। (বুখারি, হাদিস, ৪৯৭১, ৪৯৭২, মুসলিম, হাদিস, ২০৮)
সূরা লাহাব:
بّتَبَّتۡ یَدَاۤ اَبِیۡ لَہَبٍ وَّتَبَّ ؕ ١ مَاۤ اَغۡنٰی عَنۡہُ مَالُہٗ وَمَا کَسَبَ ؕ ٢ سَیَصۡلٰی نَارًا ذَاتَ لَہَبٍ ۚۖ ٣ وَّامۡرَاَتُہٗ ؕ حَمَّالَۃَ الۡحَطَبِ ۚ ٤ فِیۡ جِیۡدِہَا حَبۡلٌ مِّنۡ مَّسَدٍ
সূরা লাহাবের বাংলা উচ্চারণ :
১. তাব্বাত ইয়াদা-আবী লাহাবিওঁ ওয়া তাবব।
২. মা-আগনা-‘আনহু মা-লুহূ-ওয়ামা-কাছাব।
৩. ছা-ইয়াস-লা-না-রান যা-তা লাহাব।
৪. ওয়াম-রাআতুহূ; হাম্মা-লাতাল হাতাব।
৫. ফী জীদি-হা-হাবলুম মিম মাছাদ।
সূরা লাহাবের বাংলা অর্থ :
আবু লাহাবের দু’হাত ধ্বংস হোক এবং সে নিজে ধ্বংস হয়েই গেছে। তার সম্পদ ও তার উপার্জন তার কোন কাজে আসেনি। অচিরেই সে লেলিহান আগুনে প্রবেশ করবে। অচিরেই সে লেলিহান আগুনে প্রবেশ করবে। গলদেশে মুঞ্জ (তৃণ বিশেষ)-এর রশি লাগানো অবস্থায়। (সূরা লাহাব, আয়াত : ১-৫)
সূরা ইখলাসের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ:-
সুরা ইখলাস, পবিত্র কোরআনের অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও ছোট আয়াত বিশিষ্ট্য সূরাগুলোর একটি। এর আয়াত সংখ্যা চারটি। এটি মাক্কী সূরার অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তায়ালার সম্পর্কে কাফেরদের যথাযথ জ্ঞানের অভাব এবং আল্লাহর একত্ববাদের বর্ণনা করতে এই সূরা নাজিল হয়েছে। এই সুরার মাধ্যমে তাওহিদের আকিদাকে দৃঢ় ও প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।
এই সুরা ফজিলত সম্পর্কে অনেকগুলো হাদিস বর্ণিত হয়েছে, তবে এখানে এতটুকু বলাই যথেষ্ট হবে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিন শুরু করতেন এই সুরা তেলাওয়াতের মাধ্যমে এবং দিন শুরু করতেন এই সুরা তেলাওয়াতের মাধ্যমে। কারণ তিনি অধিকাংশ সময় ফজরের সুন্নাত ও সালাতুল বিতরে সুরা ইখলাস ও সুরা কাফিরুন তেলাওয়াত করতেন। (তাফসির ফী যিলালিল কোরআন ৬/৪০০৫)
সূরা ইখলাস :
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ - اللَّهُ الصَّمَدُ - لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ - وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
সূরা ইখলাসের বাংলা উচ্চারণ :
১. কুল হুয়াল্লাহু আহাদ।
২. আল্লাহুচ্ছামাদ।
৩.লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ।
৪. ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।’
সূরা ইখলাসের বাংলা অর্থ :
১. বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।
২. আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন।
৩. তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকেও জন্ম দেয়া হয়নি।
৪. আর তার কোন সমকক্ষও নেই। (সূরা ইখলাস, আয়াত : ১-৪)