প্রেম কাহিনী ও প্রেমের গল্প
New first |
Old first |
একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প
“কাকা, ফুচকায় আর একটু ঝাল দাও তো”- বলেই হাপুস হুপুস করে চোখ নাক মুছে আবার ফুচকাটা মুখে পুরল উদিতা । “ঝাল খেতে গিয়ে নাকের জল, চোখের জল এক হচ্ছে তবু খাওয়া চাই”- বলেই উদিতাকে ভালবেসেই দু ঘা বসাল রাহুল । উদিতা , রাহুলের কথায় বিশেষ কান না দিয়ে খাওয়ায় মনোনিবেশ করল । খাওয়া শেষে ফাউ নিয়ে খানিক তর্ক বিতর্কও হলো, তারপর হাঁটা লাগল দুজন । রাহুল আর উদিতার এই হেদুয়া পার্কের পাশ দিয়ে হাঁটাটা নতুন কিছু নয়, দীর্ঘ বেশ কয়েক বছরের অভ্যাস, বহুদিন ধরেই এই রাস্তা, দোকান, পার্কের বসার বেদি, ফুচকাওয়ালা, কৃষ্ঞচূড়া গাছটা এরা সবাই ওদের চেনে । ঐ যেদিন রাহুল প্রথম উদিতার হাত ধরেছিল, রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেই, আচমকা, সেদিন উদিতার সাথে সাথে লাল কৃষ্ঞচূড়াটাও লজ্জা পেয়েছিল, রাঙা হয়েছিল উদিতার কানের লতি, গালের লালাভ আভা সেদিন রাহুলের চোখ এড়ায়নি । অথচ, এই রাহুল আর উদিতাই কোনদিন ভাবেনি, ওদের সম্পর্কটা এতদূর গড়াবে । শুধু ওরা না, কেউই ভাবেনি । কি করে ভাবতো? দুই মেরুর দুই মানুষ একে অপরকে এতটা ভালবাসতে পারবে কোনদিন ওরা নিজেরাই ভেবেছিল? সেই যেবার হায়ার স্টাডিজের জন্য রাহুল অনেকটা দূরে চলে গেল, রাহুলকে প্রথমে কিছু না বললেও, নিঃশব্দে, আড়ালে কম চোখের জল ফেলেছিল উদিতা ? যা কোনদিন স্বপ্নেও ভাবেনি তাই হয়েছে , বুঝতেই পারেনি রাহুলকে কখন এতটা আপন করে নিয়েছে । ওদের রাতজাগা প্রতিটি কথোপকথন, খুব চেনা কফিশপটা, কলেজের গেটটা, টিউশন ব্যাচের চক ডাস্টার ব্ল্যাকবোর্ড ওদের বেড়ে ওঠা এই প্রেমের সাক্ষী । আনমনে দুজনে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এসব কথাই বারবার মনে আসছিল দুজনের । -“আচ্ছা, তোর মনে আছে, এই দোকানটার লস্যি তোর কত প্রিয় ছিল?” -“হ্যাঁ, এই দ্যাখ, সেবার পুজোয় এই দোকানটাতেই খেয়েছিলাম না ? কি খারাপ ছিল বল ।।।।” এসব বলতে বলতেই ট্রামলাইন পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে দুজন । আজ কতদিন পর আবার সেই চেনা রাস্তা, চেনা গলি, যেন অনেক না পাওয়ার মাঝে অনেকটা ফিরে পাওয়া । “আচ্ছা শোন, আজ তোকে কয়েকটা জরুরী কথা বলতেই এখানে ডাকা ।” রাহুলের দিকে তাকিয়েই বলল উদিতা । রাহুল জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালে উদিতা আবার বলল, দ্যাখ, অনেকগুলো বছর অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়ির সকলকে আটকে রেখেছি, এভাবে আর কতদিন? আমার বাড়ির লোকজন কিন্তু এবার সিরিয়াস আমার বিয়ে নিয়ে।।।।।” কথাটা আর শেষ করতে পারল না উদিতা । খুব চেনা পরিচিত ভালবাসার গল্প এটা, আমাদের সবার মতোই । রাহুলের বাবা রিটায়ার করেছেন আগের বছর, সরকারী কেরানি ছিলেন, বাড়ির অবস্থা নিতান্তই সাধারণ । সেই বাড়ি থেকে ঘুঁষ দিয়ে সরকারী চাকরি লাভ বা বহু টাকার বিনিময়ে পড়াশুনো কোনটাই সম্ভব নয় । সুতরাং, এই মন্দার বাজারে যা চাকরীর অবস্থা এতে এসব নতুন কিছু নয়, কত প্রেমই তো এই চাকরীর অভাবে – টাকার অভাবে জানলা দিয়ে পালায় । রাহুলও শুনলো শুধু চুপ করে, একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কিছুই শোনা গেল না, উদিতা জানে রাহুলও যথেষ্ট চেষ্টা করছে, কিন্তু তাও এখনও অবধি।।।।। দুইপক্ষের মৌনতায় যেন অনেকগুলো কথা বলে দিচ্ছিল, যে হাতদুটো একে অপরকে সবসময় আঁকড়ে রাখতে চেয়েছিল, আজ সেই হাতদুটোই কী ক্লান্ত? কে জানে। “তুই আমার স্বপ্ন, আমার জীবনের ইচ্ছা সবই তো জানিস।।।।।” রাহুলের মুখের কথা কেড়ে উদিতা বলল,”জানি, সবই জানি, ইনফ্যাক্ট আমিই সবথেকে ভাল জানি, কিন্তু, বাড়িতে কী বোঝাব বল তো? রোজ রোজ কী বলে বোঝাব? কী অজুহাত দেব?” -“অজুহাত? অজুহাতটা কীসের? সবটা বুঝিয়ে বললে তাদেরও তো বোঝা উচিত? তার জন্য রোজ অজুহাতের কথা কী করে আসছে? তাও তো আমি চেষ্টা করছি ।” এটুকু বলেই থামল রাহুল । ফিরে তাকাল উদিতার দিকে, শক্ত করে ধরে রাখা হাত টার দিকে তাকাল একবার । উদিতা তাকিয়ে সেই চোখগুলোর দিকে, যেগুলোর দিকে তাকিয়ে আজ এতগুলো বছর বেঁচে থাকার রসদ পেয়েছে ও । রাহুলের স্বপ্ন, ওর লেখা এগুলো তো উদিতারও স্বপ্ন ছিল, ওকে জিততে দেখাটা তো উদিতারও স্বপ্ন ছিল, কিন্তু, সমাজ আর সেই সমাজের মানুষ থুড়ি জীব-এর সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে চলতে আজ উদিতারও কোথাও যেন রাহুলের জন্য অপেক্ষাটা বিরক্তিকর ঠেকছে । রাহুলের নিজের স্বপ্নকে ছোঁয়াটা আজ উদিতার কাছে কিছুটা হলেও পাগলামো ঠেকছে, যেন, ওসব পরে হবে, চাকরিটাই জরুরী, স্বপ্ন ছোঁয়া চাট্টিখানি কথা নয়, ওসব ভেবে সময় নষ্ট করে কী লাভ? ************ দিন দিন কথার ওপর কথা বাড়ছিল, তার সাথে বাড়ছিল দূরত্ব । দুই পরিবারের ইচ্ছার চাপে, ওদের মিষ্টি সতেজ নিষ্পাপ প্রেম দীর্ঘশ্বাস ফেলছিল, কী করে যেন হারিয়ে যাচ্ছিল সবটুকু, অথচ রাহুল কিছুতেই মনঃসংযোগ করতে পারছিল না, চাকরিটাও জুটছিল না, কোনদিন ১০টা -৫টা অফিসের কাজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হবে স্বপ্নেও ভাবেনি, কিন্তু সবকিছু পেরিয়ে ভালবাসাটা যেন আর বেঁচে থাকছে না । -“দ্যাখ, আমার পক্ষে এভাবে আর সম্ভব হচ্ছে না, আমার মা বাবারও তো আমা
প্রেমের রং লাল
পরমা যেদিন ইন্টারভিউ দিতে জড়সড় পায়ে দুরুদুরু বুকে আবিরের উল্টোদিকের চেয়ারে বসে অজান্তেই ওড়নার শেষ প্রান্তটা দুহাতের তর্জনী দিয়ে গোল পাকাচ্ছিল আর "মাই নেম ইস পরমা চ্যাটার্জী" বলে ইন্ট্রোডাকশন দিচ্ছিলো, সেদিন কি জানতো এই আবির রায় ওর জীবনের একটা বড় অধ্যায় হয়ে দাঁড়াবে! প্রায় বছর তিন আগের সেই ইন্টারভিউ, আবিরের টিমেই জয়েন করা, একবছরের ট্রেনিং পিরিয়ড শেষ হবার আগেই কনফার্মেশন পাওয়া অবধি পরমার কাছে আবির রায় ছিলেন শুধুই "স্যার"। এর পর কেমন করে জানি "স্যার" থেকে বছর আটেকের বড় আবির হয়ে গেছিল "আবিরদা", আর গত দোলের পর থেকে আরও কাছের একজন! রং, আবির, দোল... এসবই যেন পরমার কাছে ছিল আতঙ্ক, সেই আট বছর বয়স থেকেই, সেই যেবার রন্টিদা রং মাখানোর নাম করে অসভ্যতামি করলো... সারা দুপুর পেরিয়ে সারারাত শুধু ছটফট করলো বিছানায় ও... মা কে হাপুস নয়নে কাঁদতে কাঁদতে সব কিছু বলার পরেও মা বললো "ও তোর পিসতুতো দাদা রমা। এসব কথা জানাজানি হলে কেলেঙ্কারি ঘটবে। তুই বরং শুয়ে থাক চুপ করে, আমি গরমজল নিয়ে আসছি"... সেই শেষ বার পরমার রং খেলা। এর পর প্রায় গত সতেরোটা বছর দোল মানেই পরমা কাটিয়েছে একরাশ ঘৃণা ভরে দরজার ছিটকিনি তুলে নিজেকে বন্দি করে। ফলে, গতবছর যখন দোলের আগের দিন অফিসের করিডরে লাঞ্চের পর থেকেই আবির খেলা শুরু হলো, আতঙ্কিত পরমা ঢাল হিসেবে পেয়েছিল অবিরদাকেই। কিছু বলতেও হয়নি। পরমার চোখ-মুখের পরিবর্তনই হয়তো আবিরকে কিছু বুঝিয়ে দিয়েছিল সেদিন। ফলে মিটিংয়ের নাম করে সেই যে পরমাকে মিটিং রুমে নিয়ে ঢোকে, দুজনে বেরোয় যখন, তখন প্রায় সন্ধ্যে। সেই লেট আওয়ারেও, টিমের কেউ কেউ রং মেখে প্রায় ভুত হয়ে পরমার দিকে তাক করতেই আবিরের গুরুগম্ভীর গলায় বারণ - "এই, ওকে কেউ রং দেবেনা, ওর সিভিয়ার এলার্জি আছে" শুনে কেউ একটা রঙের টিপ পর্যন্ত পড়ায়নি পরমার কপালে। নিজে অবশ্য সাদা শার্ট রঙিন করতে বাধা দেয়নি। প্রথমবার বাড়ি অবধি গাড়ি করে ছেড়ে দিয়ে যাবার সময় এক কাপ চা পর্যন্ত অফার করে ওঠা হয়নি সেদিন মানুষটাকে। তবে সেই দিনের পর থেকেই একটা অদ্ভুত অনুভূতি রাঙিয়ে দিয়ে গেছিল পরমার মনটাকে। অফিস যাওয়াটা, আবিরের সঙ্গে দেখা হওয়া, কথা বলা, সময় কাটানোটা যেন একটা ভালোলাগার জায়গায় পৌঁছে গেছিল। সূক্ষ্ম হতে শুরু করেছিল ভালোলাগা আর ভালোবাসার দূরত্ব! অফিসের বাইরেও বাড়তে থাকে দুজনের সময় কাটানো, ঘনিষ্ঠতা। আদান-প্রদান চলতে থাকে চিন্তা, ভাবনা, ভবিষ্যতের পরিকল্পনা। এর মধ্যে অফিসেও কানাঘুষো উঠেছে দুজনের মধ্যে এই সম্পর্কের ব্যাপারে কথাবার্তা। দুই বাড়ির লোকজন যখন দুজনের বিয়ের ব্যাপারেই উঠে পরে লাগেন, তখনই দুজনে নিয়ে ফেলে জীবনের চরম ডিসিশন... এক সঙ্গে পথ চলার সিদ্ধান্ত। আর আশ্চর্য ভাবে দিনটা সেই দোলের আগের দিন! এবারে অবশ্য দুজনেই অফিস যায়নি। ছুটি নিয়ে সারাটা দিন কাটিয়েছে নন্দনে। রাতে বাড়ি ছেড়ে দিয়ে যাবার আগে চায়ের কথা বললেও, ভেতরে আসেনি আবির। সামনের রবিবার তো আসবেই বাবা মাকে সঙ্গে নিয়ে। বরং কখন কিনেছে জানতোই না পরমা... একটা ছোট্ট প্লাসটিকের প্যাকেট থেকে একচিমটে লাল আবির নিয়ে পরমার দুগালে লাগিয়ে দিল আবির। একটু-আধটু লাল রং ছড়িয়ে পড়লো পরমার সাদা ওড়নায়। কিচ্ছুটি বললো না পরমা... বাধা দেওয়াতো দূরে থাক, জীবনে প্রথমবার যেন উপলব্ধি করছে আবিরের গন্ধটা! আবিরের আঙ্গুল ছুঁয়ে গাল ভেদ করে যেন সারা শরীরে রক্তের মতো ছড়িয়ে পড়ছে সেই উষ্ণ আবির আজ পরমার! টলতে টলতে বাড়ি ঢুকে জামা-কাপড় না বদলেই শুয়ে পড়লো ও। শুয়েই রইলো ফোনটা না আসা অবধি। আবিরের বাড়ি থেকে ফোন। এক্সপ্রেস ওয়েতে গাড়িটা অ্যাক্সিডেন্ট করেছে আবিরের। কেটে গেছে পাঁচটা বছর। সেই কম্পানি ছেড়ে নতুন অফিসে জয়েন করেছে পরমা, তাও বছর চারেক হয়ে গেল। প্রমোশন পেয়ে পরমা এখন ম্যানেজার। ইন্টারভিউ নেওয়ার আগে শর্টলিস্টেড তিনজন ক্যান্ডিডেটের সিভি গুলো একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়ার জন্য প্রিন্ট আউট হাতে নিতেই বুকটা ধক করে উঠলো ওর। প্রথম ছেলেটার নামই আবির রায়। বয়স পঁচিশ। সদ্য মাস্টার্স শেষ করে চাকরি করতে আসছে। যথারীতি ঠান্ডা ঘরে টেবিলের ওপ্রান্তে বসে ইন্টারভিউ দেওয়াকালীন ঘামলো আবির। হয়তো নিজস্ব টেনশনে খেয়াল করেনি, টেবিলের এপ্রান্তের যিনি ইন্টারভিউ নিচ্ছেন, তারও কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম, মাঝে মাঝেই অন্যমনস্ক হয়ে পড়ছেন ম্যাডাম। ইন্টারভিউ শেষ করেই ওয়াশরুমে গিয়ে হাউ হাউ করে অনেকটা কাঁদলো পরমা। বেশ অনেক্ষণ সময় নিয়ে কিউবিকলে ফিরেই কয়েকটা মেল চেক করে আর পাঠিয়ে কাঁধে ব্যাগটা তুলে নিল ও। পাশের টেবিল থেকে ব্রততী ততক্ষণে চিমটি কেটে দিয়েছে একটা "ও, কাল হোলি, ম্যাডামতো আজ আর্লি লিভ নেবেই। কেন যে তুই ব্যাপারটা এনজয় করিস না..."! বাড়ি ফিরে সন্ধ্যেবেলা এককাপ চা নিয়ে অন্য দিনের মতোই খাটের পাশে এসে বসলো পরমা। বলে চলেছে আজকের অফিসের অভিজ্ঞতা। অন্যদিনের মতোই পরমার কথার কোনো জবাব না দিয়ে শুধু তার দিকে তাকিয়ে থাকে আবির। সেই কার অ্যাক
Aabha Paul Sexy Pics: কালো শাড়িতে অভিনেত্রী আভা পলের সেক্সি ছবি, শাড়িতে সুন্দরী আভার সেক্সি পোজের ছবি ভাইরাল
সৌন্দর্যের জন্য খুবই জনপ্রিয় অভিনেত্রী আভা পল। প্রায় প্রতিদিনই নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে নতুন নতুন রূপে ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করেন আভা পল। অভিনেত্রী আভা পলের এই নতুন নতুন লুকের হট ও সেক্সি ছবি এবং ভিডিওর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ভক্তরা। ভক্তদের এই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ফের নতুন ছবি শেয়ার করেছেন আভা পল। সেক্সি শাড়ি লুকের ছবি শেয়ার করেছেন এই পোস্টে। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা নতুন ছবিতে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে একটি কালো শাড়ি ও কালো সেক্সি টপ স্টাইলের ব্লাউজ পরেছেন আভা পল। এই লুকে সেক্সি পোজ দিতেও দেখা যায় তাকে। মাঝারি ধরনের মেকআপ, খোলা চুলে এবং স্টাইলিশ পোজের জন্য অসাধারণ দেখতে লাগছে আভাকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল আভা পলের এই পোস্টের কমেন্ট বক্সে তার সেক্সি শাড়ি লুকের প্রশংসা করছেন ভক্তরা। এই পোস্টে আভার শাড়ি পরার স্টাইল দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছেন ভক্তরা।
সর্বকালের সেরা প্রেমকাহিনী
প্রেম মানে না জাতি ধর্ম, প্রেম মানে না সমাজ, তাই প্রেমের টানে ইতিহাসের শুরু থেকেই পৃথিবীতে ঘটেছে অবিস্মরণীয় সব ঘটনা। প্রেমের টানে সিংহাসন ছেড়ে পথিক হয়ে গেছেন কেউ কেউ, প্রেমের টানেই কেউবা আবার আপন করে নিয়েছেন পৃথিবীর সব দুঃখ-গাথা। আসুন আজ জানি ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ১০টি প্রেমের কাহিনী- ইতিহাসের সর্বকালের সেরা প্রেমকাহিনী
একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প
“কাকা, ফুচকায় আর একটু ঝাল দাও তো”- বলেই হাপুস হুপুস করে চোখ নাক মুছে আবার ফুচকাটা মুখে পুরল উদিতা । “ঝাল খেতে গিয়ে নাকের জল, চোখের জল এক হচ্ছে তবু খাওয়া চাই”- বলেই উদিতাকে ভালবেসেই দু ঘা বসাল রাহুল । উদিতা , রাহুলের কথায় বিশেষ কান না দিয়ে খাওয়ায় মনোনিবেশ করল । খাওয়া শেষে ফাউ নিয়ে খানিক তর্ক বিতর্কও হলো, তারপর হাঁটা লাগল দুজন । রাহুল আর উদিতার এই হেদুয়া পার্কের পাশ দিয়ে হাঁটাটা নতুন কিছু নয়, দীর্ঘ বেশ কয়েক বছরের অভ্যাস, বহুদিন ধরেই এই রাস্তা, দোকান, পার্কের বসার বেদি, ফুচকাওয়ালা, কৃষ্ঞচূড়া গাছটা এরা সবাই ওদের চেনে । ঐ যেদিন রাহুল প্রথম উদিতার হাত ধরেছিল, রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেই, আচমকা, সেদিন উদিতার সাথে সাথে লাল কৃষ্ঞচূড়াটাও লজ্জা পেয়েছিল, রাঙা হয়েছিল উদিতার কানের লতি, গালের লালাভ আভা সেদিন রাহুলের চোখ এড়ায়নি । অথচ, এই রাহুল আর উদিতাই কোনদিন ভাবেনি, ওদের সম্পর্কটা এতদূর গড়াবে । শুধু ওরা না, কেউই ভাবেনি । কি করে ভাবতো? দুই মেরুর দুই মানুষ একে অপরকে এতটা ভালবাসতে পারবে কোনদিন ওরা নিজেরাই ভেবেছিল? সেই যেবার হায়ার স্টাডিজের জন্য রাহুল অনেকটা দূরে চলে গেল, রাহুলকে প্রথমে কিছু না বললেও, নিঃশব্দে, আড়ালে কম চোখের জল ফেলেছিল উদিতা ? যা কোনদিন স্বপ্নেও ভাবেনি তাই হয়েছে , বুঝতেই পারেনি রাহুলকে কখন এতটা আপন করে নিয়েছে । ওদের রাতজাগা প্রতিটি কথোপকথন, খুব চেনা কফিশপটা, কলেজের গেটটা, টিউশন ব্যাচের চক ডাস্টার ব্ল্যাকবোর্ড ওদের বেড়ে ওঠা এই প্রেমের সাক্ষী । আনমনে দুজনে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এসব কথাই বারবার মনে আসছিল দুজনের । -“আচ্ছা, তোর মনে আছে, এই দোকানটার লস্যি তোর কত প্রিয় ছিল?” -“হ্যাঁ, এই দ্যাখ, সেবার পুজোয় এই দোকানটাতেই খেয়েছিলাম না ? কি খারাপ ছিল বল ।।।।” এসব বলতে বলতেই ট্রামলাইন পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে দুজন । আজ কতদিন পর আবার সেই চেনা রাস্তা, চেনা গলি, যেন অনেক না পাওয়ার মাঝে অনেকটা ফিরে পাওয়া । “আচ্ছা শোন, আজ তোকে কয়েকটা জরুরী কথা বলতেই এখানে ডাকা ।” রাহুলের দিকে তাকিয়েই বলল উদিতা । রাহুল জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালে উদিতা আবার বলল, দ্যাখ, অনেকগুলো বছর অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়ির সকলকে আটকে রেখেছি, এভাবে আর কতদিন? আমার বাড়ির লোকজন কিন্তু এবার সিরিয়াস আমার বিয়ে নিয়ে।।।।।” কথাটা আর শেষ করতে পারল না উদিতা । খুব চেনা পরিচিত ভালবাসার গল্প এটা, আমাদের সবার মতোই । রাহুলের বাবা রিটায়ার করেছেন আগের বছর, সরকারী কেরানি ছিলেন, বাড়ির অবস্থা নিতান্তই সাধারণ । সেই বাড়ি থেকে ঘুঁষ দিয়ে সরকারী চাকরি লাভ বা বহু টাকার বিনিময়ে পড়াশুনো কোনটাই সম্ভব নয় । সুতরাং, এই মন্দার বাজারে যা চাকরীর অবস্থা এতে এসব নতুন কিছু নয়, কত প্রেমই তো এই চাকরীর অভাবে – টাকার অভাবে জানলা দিয়ে পালায় । রাহুলও শুনলো শুধু চুপ করে, একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কিছুই শোনা গেল না, উদিতা জানে রাহুলও যথেষ্ট চেষ্টা করছে, কিন্তু তাও এখনও অবধি।।।।। দুইপক্ষের মৌনতায় যেন অনেকগুলো কথা বলে দিচ্ছিল, যে হাতদুটো একে অপরকে সবসময় আঁকড়ে রাখতে চেয়েছিল, আজ সেই হাতদুটোই কী ক্লান্ত? কে জানে। “তুই আমার স্বপ্ন, আমার জীবনের ইচ্ছা সবই তো জানিস।।।।।” রাহুলের মুখের কথা কেড়ে উদিতা বলল,”জানি, সবই জানি, ইনফ্যাক্ট আমিই সবথেকে ভাল জানি, কিন্তু, বাড়িতে কী বোঝাব বল তো? রোজ রোজ কী বলে বোঝাব? কী অজুহাত দেব?” -“অজুহাত? অজুহাতটা কীসের? সবটা বুঝিয়ে বললে তাদেরও তো বোঝা উচিত? তার জন্য রোজ অজুহাতের কথা কী করে আসছে? তাও তো আমি চেষ্টা করছি ।” এটুকু বলেই থামল রাহুল । ফিরে তাকাল উদিতার দিকে, শক্ত করে ধরে রাখা হাত টার দিকে তাকাল একবার । উদিতা তাকিয়ে সেই চোখগুলোর দিকে, যেগুলোর দিকে তাকিয়ে আজ এতগুলো বছর বেঁচে থাকার রসদ পেয়েছে ও । রাহুলের স্বপ্ন, ওর লেখা এগুলো তো উদিতারও স্বপ্ন ছিল, ওকে জিততে দেখাটা তো উদিতারও স্বপ্ন ছিল, কিন্তু, সমাজ আর সেই সমাজের মানুষ থুড়ি জীব-এর সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে চলতে আজ উদিতারও কোথাও যেন রাহুলের জন্য অপেক্ষাটা বিরক্তিকর ঠেকছে । রাহুলের নিজের স্বপ্নকে ছোঁয়াটা আজ উদিতার কাছে কিছুটা হলেও পাগলামো ঠেকছে, যেন, ওসব পরে হবে, চাকরিটাই জরুরী, স্বপ্ন ছোঁয়া চাট্টিখানি কথা নয়, ওসব ভেবে সময় নষ্ট করে কী লাভ? ************ দিন দিন কথার ওপর কথা বাড়ছিল, তার সাথে বাড়ছিল দূরত্ব । দুই পরিবারের ইচ্ছার চাপে, ওদের মিষ্টি সতেজ নিষ্পাপ প্রেম দীর্ঘশ্বাস ফেলছিল, কী করে যেন হারিয়ে যাচ্ছিল সবটুকু, অথচ রাহুল কিছুতেই মনঃসংযোগ করতে পারছিল না, চাকরিটাও জুটছিল না, কোনদিন ১০টা -৫টা অফিসের কাজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হবে স্বপ্নেও ভাবেনি, কিন্তু সবকিছু পেরিয়ে ভালবাসাটা যেন আর বেঁচে থাকছে না । -“দ্যাখ, আমার পক্ষে এভাবে আর সম্ভব হচ্ছে না, আমার মা বাবারও তো আমা
প্রেমের রং লাল
পরমা যেদিন ইন্টারভিউ দিতে জড়সড় পায়ে দুরুদুরু বুকে আবিরের উল্টোদিকের চেয়ারে বসে অজান্তেই ওড়নার শেষ প্রান্তটা দুহাতের তর্জনী দিয়ে গোল পাকাচ্ছিল আর "মাই নেম ইস পরমা চ্যাটার্জী" বলে ইন্ট্রোডাকশন দিচ্ছিলো, সেদিন কি জানতো এই আবির রায় ওর জীবনের একটা বড় অধ্যায় হয়ে দাঁড়াবে! প্রায় বছর তিন আগের সেই ইন্টারভিউ, আবিরের টিমেই জয়েন করা, একবছরের ট্রেনিং পিরিয়ড শেষ হবার আগেই কনফার্মেশন পাওয়া অবধি পরমার কাছে আবির রায় ছিলেন শুধুই "স্যার"। এর পর কেমন করে জানি "স্যার" থেকে বছর আটেকের বড় আবির হয়ে গেছিল "আবিরদা", আর গত দোলের পর থেকে আরও কাছের একজন! রং, আবির, দোল... এসবই যেন পরমার কাছে ছিল আতঙ্ক, সেই আট বছর বয়স থেকেই, সেই যেবার রন্টিদা রং মাখানোর নাম করে অসভ্যতামি করলো... সারা দুপুর পেরিয়ে সারারাত শুধু ছটফট করলো বিছানায় ও... মা কে হাপুস নয়নে কাঁদতে কাঁদতে সব কিছু বলার পরেও মা বললো "ও তোর পিসতুতো দাদা রমা। এসব কথা জানাজানি হলে কেলেঙ্কারি ঘটবে। তুই বরং শুয়ে থাক চুপ করে, আমি গরমজল নিয়ে আসছি"... সেই শেষ বার পরমার রং খেলা। এর পর প্রায় গত সতেরোটা বছর দোল মানেই পরমা কাটিয়েছে একরাশ ঘৃণা ভরে দরজার ছিটকিনি তুলে নিজেকে বন্দি করে। ফলে, গতবছর যখন দোলের আগের দিন অফিসের করিডরে লাঞ্চের পর থেকেই আবির খেলা শুরু হলো, আতঙ্কিত পরমা ঢাল হিসেবে পেয়েছিল অবিরদাকেই। কিছু বলতেও হয়নি। পরমার চোখ-মুখের পরিবর্তনই হয়তো আবিরকে কিছু বুঝিয়ে দিয়েছিল সেদিন। ফলে মিটিংয়ের নাম করে সেই যে পরমাকে মিটিং রুমে নিয়ে ঢোকে, দুজনে বেরোয় যখন, তখন প্রায় সন্ধ্যে। সেই লেট আওয়ারেও, টিমের কেউ কেউ রং মেখে প্রায় ভুত হয়ে পরমার দিকে তাক করতেই আবিরের গুরুগম্ভীর গলায় বারণ - "এই, ওকে কেউ রং দেবেনা, ওর সিভিয়ার এলার্জি আছে" শুনে কেউ একটা রঙের টিপ পর্যন্ত পড়ায়নি পরমার কপালে। নিজে অবশ্য সাদা শার্ট রঙিন করতে বাধা দেয়নি। প্রথমবার বাড়ি অবধি গাড়ি করে ছেড়ে দিয়ে যাবার সময় এক কাপ চা পর্যন্ত অফার করে ওঠা হয়নি সেদিন মানুষটাকে। তবে সেই দিনের পর থেকেই একটা অদ্ভুত অনুভূতি রাঙিয়ে দিয়ে গেছিল পরমার মনটাকে। অফিস যাওয়াটা, আবিরের সঙ্গে দেখা হওয়া, কথা বলা, সময় কাটানোটা যেন একটা ভালোলাগার জায়গায় পৌঁছে গেছিল। সূক্ষ্ম হতে শুরু করেছিল ভালোলাগা আর ভালোবাসার দূরত্ব! অফিসের বাইরেও বাড়তে থাকে দুজনের সময় কাটানো, ঘনিষ্ঠতা। আদান-প্রদান চলতে থাকে চিন্তা, ভাবনা, ভবিষ্যতের পরিকল্পনা। এর মধ্যে অফিসেও কানাঘুষো উঠেছে দুজনের মধ্যে এই সম্পর্কের ব্যাপারে কথাবার্তা। দুই বাড়ির লোকজন যখন দুজনের বিয়ের ব্যাপারেই উঠে পরে লাগেন, তখনই দুজনে নিয়ে ফেলে জীবনের চরম ডিসিশন... এক সঙ্গে পথ চলার সিদ্ধান্ত। আর আশ্চর্য ভাবে দিনটা সেই দোলের আগের দিন! এবারে অবশ্য দুজনেই অফিস যায়নি। ছুটি নিয়ে সারাটা দিন কাটিয়েছে নন্দনে। রাতে বাড়ি ছেড়ে দিয়ে যাবার আগে চায়ের কথা বললেও, ভেতরে আসেনি আবির। সামনের রবিবার তো আসবেই বাবা মাকে সঙ্গে নিয়ে। বরং কখন কিনেছে জানতোই না পরমা... একটা ছোট্ট প্লাসটিকের প্যাকেট থেকে একচিমটে লাল আবির নিয়ে পরমার দুগালে লাগিয়ে দিল আবির। একটু-আধটু লাল রং ছড়িয়ে পড়লো পরমার সাদা ওড়নায়। কিচ্ছুটি বললো না পরমা... বাধা দেওয়াতো দূরে থাক, জীবনে প্রথমবার যেন উপলব্ধি করছে আবিরের গন্ধটা! আবিরের আঙ্গুল ছুঁয়ে গাল ভেদ করে যেন সারা শরীরে রক্তের মতো ছড়িয়ে পড়ছে সেই উষ্ণ আবির আজ পরমার! টলতে টলতে বাড়ি ঢুকে জামা-কাপড় না বদলেই শুয়ে পড়লো ও। শুয়েই রইলো ফোনটা না আসা অবধি। আবিরের বাড়ি থেকে ফোন। এক্সপ্রেস ওয়েতে গাড়িটা অ্যাক্সিডেন্ট করেছে আবিরের। কেটে গেছে পাঁচটা বছর। সেই কম্পানি ছেড়ে নতুন অফিসে জয়েন করেছে পরমা, তাও বছর চারেক হয়ে গেল। প্রমোশন পেয়ে পরমা এখন ম্যানেজার। ইন্টারভিউ নেওয়ার আগে শর্টলিস্টেড তিনজন ক্যান্ডিডেটের সিভি গুলো একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়ার জন্য প্রিন্ট আউট হাতে নিতেই বুকটা ধক করে উঠলো ওর। প্রথম ছেলেটার নামই আবির রায়। বয়স পঁচিশ। সদ্য মাস্টার্স শেষ করে চাকরি করতে আসছে। যথারীতি ঠান্ডা ঘরে টেবিলের ওপ্রান্তে বসে ইন্টারভিউ দেওয়াকালীন ঘামলো আবির। হয়তো নিজস্ব টেনশনে খেয়াল করেনি, টেবিলের এপ্রান্তের যিনি ইন্টারভিউ নিচ্ছেন, তারও কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম, মাঝে মাঝেই অন্যমনস্ক হয়ে পড়ছেন ম্যাডাম। ইন্টারভিউ শেষ করেই ওয়াশরুমে গিয়ে হাউ হাউ করে অনেকটা কাঁদলো পরমা। বেশ অনেক্ষণ সময় নিয়ে কিউবিকলে ফিরেই কয়েকটা মেল চেক করে আর পাঠিয়ে কাঁধে ব্যাগটা তুলে নিল ও। পাশের টেবিল থেকে ব্রততী ততক্ষণে চিমটি কেটে দিয়েছে একটা "ও, কাল হোলি, ম্যাডামতো আজ আর্লি লিভ নেবেই। কেন যে তুই ব্যাপারটা এনজয় করিস না..."! বাড়ি ফিরে সন্ধ্যেবেলা এককাপ চা নিয়ে অন্য দিনের মতোই খাটের পাশে এসে বসলো পরমা। বলে চলেছে আজকের অফিসের অভিজ্ঞতা। অন্যদিনের মতোই পরমার কথার কোনো জবাব না দিয়ে শুধু তার দিকে তাকিয়ে থাকে আবির। সেই কার অ্যাক